চৌগাছায় হোটেল-রেস্তোরাঁয় অবাধে পঁচাবাসী খাবার বিক্রি

0

এম. এ. রহিম চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় করোনা মহামারীর মধ্যেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার ফলে হোটেল-রেস্তোরাঁয় স্বাস্থ্য আইন না মেনে অবাধে পঁচাবাসী খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। এতে মানুষ পেটের পীড়াসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলাবাসীর চোখে ধুলো দিয়ে এসব হোটেল-বেকারি বহাল তবিয়তে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌর শহরের চৌগাছা সদর, পুড়াপাড়া, সিংহঝুলী, সলুয়া, কুঠিপাড়া, হাকিমপুর, নিমতলা, পাতিবিলা, নারায়ণপুর, চাঁদপাড়া, ফাঁসতলা, ধুলিয়ানী, ঝাওতলা, আন্দুলিয়া, কমলাপুর, খড়িঞ্চা, রামকৃষ্ণপুর, পাশাপোল বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বেকারি। এ সকল হোটেল-বেকারিতে স্বাস্থ্য আইন মানা হচ্ছে না। অস্বাস্থ্যকর পানি ও পঁচাবাসী খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। অধিকাংশ হোটেল-বেকারির প্রসেসিং লাইসেন্সই নেই। খাবার হোটেলগুলোর সামনের দিক পরিপাটি থাকলেও রান্নাবান্নার স্থান নোংরা এবং খাবার রাখা হয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।
এ ব্যাপারে শহরের বাসীন্দা সাবেক ইউপি মেম্বার সর্দার আনিছুর রহমান বলেন, পৌর শহরের হোটেল-বেকারিগুলো দেখভাল করার জন্য পৌরসভায় একজন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর থাকলেও তিনি এসব দেখভাল করেন না। অভিযোগ রয়েছে, তাকে ম্যানেজ করেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় পরিবেশন করা হচ্ছে অতিমাত্রায় আর্সেনিকযুক্ত পানি ও পঁচাবাসী খাবার। তিনি বলেন, প্রতিদিন আমরা টাকা খরচ করে খাবারের নামে বিষ কিনে খাচ্ছি। তাছাড়া কর্মচারীদের জন্য নেই কোন স্যানিটেশন ব্যবস্থা। হোটেল ও বেকারি কর্মচারীদের বেশির ভাগ চর্মরোগে আক্রান্ত। বিশেষ করে খাবার হোটেলগুলোতে দিনশেষে যা অবশিষ্ট থাকে তা পরের দিন গরম করে বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন হোটেলে দেশি মুরগির মাংস বলে বিক্রি করা হয় ব্রয়লারের মাংস। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি মেম্বার ইয়াকুব আলী বলেন, বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত গরু-ছাগল রাতের আঁধারে জবাই করা হয়। আবার রাতের আঁধারেই মাংস পৌঁছে দেওয়া হয় হোটেলে। উপজেলা প্রশাসন বছরে দুই একবার নামমাত্র অভিযান চালিয়ে নামিদামি এসব হোটেল-বেকারি মালিককে জরিমানা করে থাকেন। তবে পৌরসভায় একজন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর থাকলেও তাকে এ বিষয়ে কখনো তৎপর দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে চৌগাছা পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মেহবুব হুসাইন নয়ন বলেন, কোন হোটেল বা বেকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তবে হোটেল-রেস্তোরাঁয় আর্সেনিকযুক্ত পানি ও পঁচাবাসী খাবার পরিবেশন না করতে প্রতিনিয়ত তাদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়। করোনার মধ্যে হোটেল-বেকারিতে মানুষ খাদ্য খাবার কিনতে গেলে আমার কি করার আছে। তবে আমরা সকলেই যদি সচেতন হই তাহলে এটা প্রতিরোধ করা সহজ হবে। চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন নাহার লাকি বলেন, আর্সেনিকযুক্ত পানি ও পঁচাবাসী খাবার খেলে মানুষ পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, আমাশয়, কলেরাসহ নানা কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। করোনা মহামারীর মধ্যেও যারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ভেজাল ও পঁচাবাসী খাবারের ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, ভেজাল ও পঁচাবাসী খাবারের বিরুদ্ধে কঠোর উপজেলা প্রশাসন। আমরা ইতিমধ্যে শহরের বেশকটি মিষ্টির দোকান ও খাবারের হোটেলে অভিযান পরিচালনা করেছি। ভেজাল ও পঁচাবাসী খাবারের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।