করোনা : চৌগাছার ঐতিহ্যবাহী পীর বলুহ মেলা এবছর হচ্ছে না

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছার ঐতিহ্যবাহী পীর বলুহ মেলা অবশেষে হচ্ছে না। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে প্রশাসন এ বছর মেলা বসার অনুমতি দেয়নি। ফলে যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই মেলার এবারই প্রথম ছন্দপতন ঘটলো বলে জানান এলাকাবাসী। তবে মেলা বসছে না এমন খবরে চরম হতাশায় পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ী ও ফেরিওয়ালারা।
চৌগাছা উপজেলার হাজরাখানা গ্রামে এ অঞ্চলের প্রখ্যাত পীর বলুহ দেওয়ান (র.) এর রওজা শরীফকে ঘিরে প্রতি বছর বাংলা সনের শেষ মঙ্গলবার বসে ওরস ও মেলা। অন্যান্য বছরের মত এবারও মেলা উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে আসেন হরেক রকম পণ্যের ব্যবসায়ীরা। অস্থায়ী দোকান করে পসরা সাজিয়ে বসেন অনেকে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে মেলা বসার কথা থাকলেও অবশেষে প্রশাসন থেকে কোন অনুমতি পায়নি মেলা কর্তৃপক্ষ। এতে করে স্থানীয় জায়গার মালিক, ছোট ছোট ব্যবসায়ী সর্বোপরি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
শীতের কম্বল নিয়ে আসা গোপালগঞ্জ জেলার ব্যবসায়ী আফতাব আলী বলেন, ‘করোনায় এ বছর ব্যবসায় চরম ক্ষতি হয়েছে। এক বুক আশা নিয়ে এসেছিলাম মেলায় ব্যবসা করে হাসিমুখে বাড়িতে ফিরবো। কিন্তু সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে। অনুমতি না পাওয়ায় মেলা বসবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে।’ জীবননগর থেকে ফার্ণিচার নিয়ে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাক ভাড়া করে ফার্ণিচার নিয়ে এসেছি। মেলায় বসতেই পারিনি। এখন এই ফর্ণিচার কি করবো? কোথায় বিক্রি করবো?’ হাজরাখানা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘বছরে একবারই মেলা বসে। মেলায় অস্থায়ী দোকানের জন্য জায়গা ভাড়া দিয়ে আমাদের বেশ রোজগার হয়। কিন্তু এ বছর সবকিছু শেষ হয়ে গেল।’ করোনা ভাইরাস যেমন তেমন, গ্রাম্য রাজনীতির কারণে এ বছর মেলা হয়নি বলে তারা মন্তব্য করেন। মেলা পরিচালনার জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মিলন ও সাধারণ সম্পাদক বিএম বাবুল আক্তার বাবু বলেন, ‘গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে ঐতিহ্যবাহী এই মেলার কথা বিবেচনা করে স্বল্প পরিসরে হলেও মেলা বসার অনুমতির জন্য চেষ্টা করেছি, কিন্তু প্রশাসন থেকে কোন অনুমতি না পাওয়ায় এ বছর মেলা বসানো সম্ভব হয়নি। তবে পীর বলুহ দেওয়ান (র.) রওজা শরীফকে ঘিরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওরস চলবে।’