বন্যায় মাথাপিছু ত্রাণ আড়াই কেজি চাল ও ৫.৭০ টাকা : সিপিডি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সাম্প্রতিক সময়ে বন্যায় দেশের ৩৩ জেলার ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা ওই জেলাগুলো জনসংখ্যার ৬ দশমিক ১ শতাংশ। চলতি বছরের বন্যা ৩৫ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান রয়েছে। ফলে পুরো ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি। তবে যতটুকু পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে, শস্য ও গোবাদিপশু মিলে ১১ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের (৯৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকা) সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বলে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় সরকার যে ত্রাণ সরবরাহ করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। মাথাপিছু চাল পেয়েছে আড়াই কেজি এবং ৫ টাকা ৭০ পয়সা। পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতারও যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
বন্যায় ক্ষতি নিয়ে সিপিডির বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এবং তা উত্তরণে করণীয় কী এ বিষয়ে বুধবার এক অনলাইনে সংলাপে সংস্থাটির পক্ষ থেকে তথ্য তুলে ধরা হয়। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের উপস্থাপনায় সিপিডির সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন সিপিডি‘র চেয়ারমম্যান অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান। বক্তব্য রাখনে পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোতাহার হোসেন প্রমুখ। সিডিপির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ দেয়া চাল ও টাকা যথেষ্ট না। এ পর্যন্ত জিআর (ত্রাণ সহায়তা) চাল বরাদ্দ করা হয়েছে ১৯ লাখ ৫১০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ১২ লাখ ৮১৮ মেট্রিক টন। এতে গড়ে মাথাপিছু জিআর চাল সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক আড়াই কেজি। আর জিআর নগদ বরাদ্দ করা হয়েছে চার কোটি ২৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এতে গড়ে মাথাপিছু নগদ টাকার সহায়তার পরিমাণ আনুমানিক ৫ টাকা ৭০ পয়সা। এবারের বন্যায় যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। পরিবার প্রতি ১০ কেজি ৭শ’ গ্রাম চাল এবং ২৩ টাকা ৯০ পয়সা করে পেয়েছে। এই ত্রাণ কার্যক্রমের পরিসর বাড়ানোর পাশাপাশি স্বচ্ছতারও প্রয়োজন। ত্রাণ বিতরণের স্থানীয় এনজিওগুলোকে সংযুক্ত করার দাবি জানান হয়। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, এবারের বন্যা স্থায়িত্বের দিক থেকে ১৯৮৮ এবং ২০০৪ সালের বন্যার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ৩৫ দিনের বন্যায় ৪ কোটি ২০ ডলারের সমপরিমাণ শস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৭ কোটি ৪৫ লাখ ডলার মূল্যের সমপরিমাণ গবাধিপশু, এক লাখ ২৫ হাজার ৫৪৯ হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ হাজার ৫৩৭ হেক্টার জমির গাছপালা, ৮১ হাজার ১৭৯টি টিউবওয়েল, ৭৩ হাজার ৩৪৩টি ল্যাটিন এবং এক হাজার ৯শ’র বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।