সাগরখালীর খরায় চলে সংসারের চাকা

0

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা॥ বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি ভরপুর থাকে। এসময় মাছও বেশ ভালো পাওয়া যায়। খুব সহজেই খরা জাল তৈরি করে মাছ শিকার করেন অনেকেই। আর এই খরা জাল দিয়ে সাগরখালী নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাচ্ছে কুষ্টিয়ার কয়েকশ’ পরিবার। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সদরপুর এলাকায় সাগরখালী নদীতে দেখা মেলে বেশ কয়েকজন মাছ শিকারির। বাঁশ দিয়ে পাতা এসব খরা জালের মাধ্যমে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করেন তারা।
সদরপুর এলাকার ফরিদুল, মুনতাজ, লতিফ, জয়নাল, শুকচান, আয়নাল, সোহাগ, ইসরাইল, শফি, রকিবুল, ওমরসহ বেশ কয়েকজনকে দেখা যায় মাছ ধরতে। সারাদিন ধরে জাল নিয়েই পড়ে থাকেন তাদের মতো অনেকেই। দিনশেষে যা মাছ হয়, তাই বেচেই সংসার চালান তারা। ফরিদুল ইসলাম জানান, একটা খরা তৈরি করতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা মতো খরচ লাগে। ঠিকমতো ব্যবহার করলে একটা খরা ৩-৫ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। শুধু মাঝে মাঝে খরার জাল পরিবর্তন করতে হয়। তিনি বলেন, ‘মাছ এখন ভালো হচ্ছে। প্রতিদিন এক হাজার থেকে পনেরশ’ টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে। আবার অন্য সময় কম হয়। ১০০-২০০ টাকার মতো মাছ পাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়ে।’ মঙ্গলবার সকাল ৬টা সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৫ কেজি ছোট মাছ পেয়েছেন বলে জানান ফরিদুল ইসলাম। এর মধ্যে মায়া, পুঁটি, টেংরা ও টাকি মাছ রয়েছে। স্থানীয় বাজারে তিনি ১৫০-২০০ টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি করেন। সোহাগ আলী বলেন, ‘‘আজকে মাছ ভালো উঠেছে। চাঁন্দা, পুঁটি ও তেলাপিয়া মাছ পাওয়া গেছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আট কেজি মাছ বিক্রি করেছি। এখনও প্রায় ৫/৭ কেজি মাছ রয়েছে। সেগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে।
‘দিনের চেয়ে রাতে মাছ বেশি ধরা পড়ে। রাতে-দিনে সব সময়ই মাছ ধরি। এই মাছ ধরেই সংসার চলে আমাদের। আজ এই গাঙে কাল অন্য গাঙে। এই কাজই করি আমরা।’ মুনতাজ আলী জানান, খরা জালে এখন লাভ ভালই হয়। তবে বাঁশ ও জালের দাম বেশি হয়ে গেছে। তৈরি করার খরচ একটু বেশি। তিনি বলেন, ‘বাজারে ছোট মাছের চাহিদা বেশ ভালো। বাজারে গিয়ে বসে থাকতে হয় না। অনেকেই এই খরার কাছ থেকেই মাছ কিনে নিয়ে যান।’ সদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হক রবি বলেন, ‘সারা বছরই এরা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে বর্ষা মৌসুমে এদের একটু লাভ হয়। এসময় ভালোই মাছ পাওয়া যায়।’