ঝিকরগাছার শিশুধর্ষণ ও গর্ভপাতের ঘটনায় মামলা॥ ধর্ষক পলাতক, পিতাকে আটক করল পুলিশ

0

তরিকুল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর)॥ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মাটশিয়া গ্রামে এক শিশুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও পরবর্তীতে গর্ভপাত ঘটনায় অবশেষে মামলা দায়ের করেছে ধর্ষিতার মাতা। ধর্ষক পলাতক থাকলেও তার পিতাকে আটক করেছে বাঁকড়া পুলিশ। ধর্ষিতার মাতা মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। সে গত ৬ মাস যাবৎ প্রায় অসুস্থতা বোধ করে। গত ২৬ এপ্রিল ওই শিক্ষার্থী গুরুতরভাবে অসুস্থ হলে পরিবারের লোকজন চিকিৎসার জন্য পাশ্ববর্তী করোরোয়া বাজারের মুন্না ডিজিটাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক করে জানায় ওই শিক্ষার্থী ২৪ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্ত্বা। তখন মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সে জানায়, গত ১৫/১১/২০১৯ তারিখ দুপুরে বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার প্রতিবেশী চাচা ফজলে আলী দফাদারের ছেলে জয়নাল আবেদীন তার ঘরে প্রবেশ করে ওড়না ও গামছা দিয়ে হাত-পা এবং মুখ বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি প্রদান করে। ফলে লোকলজ্জার ভয়ে ওই শিক্ষার্থী কাউকে কিছু বলেনি। পরে জয়নাল আবেদীনের পিতা-মাতা বিষয়টি জানতে পেরে, ওই শিক্ষার্থীকে গত ৩০ এপ্রিল ২০২০ তারিখে ঔষধের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটায়। ফলে প্রচুর পরিমানে রক্তক্ষরণে শিক্ষার্থীর জীবন এখন সংকটাপন্ন। এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে শালিশী বৈঠক বসার কথা বলে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। অবশেষে ৮ জুন সোমবার ঝিকরগাছা থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১) তৎসহ ৩১৩ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছে ধর্ষিতার মাতা। যার নং-৭, তারিখ-০৮/০৬/২০২০ ইং। মামলায় জয়নাল আবেদীন (৩০) কে প্রধান করে ৭ জনকে আসামী করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীরা হলেন, জয়নালের পিতা ফজলে আলী দফাদার (৫০), মাতা শাহিদা বেগম (৪৫), তার বোন ময়না খাতুন (৩৫), ভগ্নিপতি দিগদানা গ্রামের আকবর আলী খাঁর ছেলে ইশা খাঁ (৩৮), এবং কলারোয়া উপজেলার রহিম বক্সস গাজীর ছেলে আকবর আলী গাজী (৪৮) ও আলতাপ আলী গাজী (৩৫)। এদিকে সোমবার সকালে অভিযোগের ভিত্তিতে বাঁকড়া পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষক জয়নাল আবেদীনের পিতা ফজলে আলী দফাদারকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্রেরণ করেছে। বাকী আসামীরা পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মিজানুর রহমান জানান, ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে ডাক্টারী পরীক্ষা ও জনানবন্দী নেয়া হয়েছে। বাকী আসামীদের আটকের চেষ্টা অব্যহত আছে।