আমরা যে একটা স্বাধীন স্বয়ং সম্পূর্ণ জাতি এই স্বপ্ন তৈরি করেছিলেন শহীদ জিয়া: মির্জা ফখরুল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ‘‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষের একটা পরিচিত দিয়েছিলেন এবং আমরা যে একটা স্বাধীন স্বয়ং সম্পূর্ণ জাতি সেই স্বপ্ন তৈরি করেছি্লেন তিনি, অল্পসময়ের মধ্যেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। আমরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে আহবান জানাতে চাই যে আসুন ৩০ মে এই মহান রাষ্ট্রনায়ককে স্মরণ করে তিনি যে কাজগুলো করে যেতে পারেননি, সেই কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্যে আমরা একযোগে একতাবদ্ধ হই।” বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উত্তরার নিজের বাসা থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের ভার্চুয়াল ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন । এখন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সরকারের চরম অবহেলা ও সমন্বয়হীনতা রয়েছে। যে কারনে দেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তারা করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের নামে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। ফলে মানুষ ছুটি ভোগ করছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনো কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এ সময় বিএনপি’র মহাসচিব প্রয়াত নেতার ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচিসমূহ হচ্ছে, ৩০ মে সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় ঢাকায় শেরে বাংলানগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শুধু মাত্র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পুস্পমাল্য অর্পণে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকাল সাড়ে তিনটায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের প্রতিষ্ঠাতার স্মরণে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা এবং ১ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত শহীদ জিয়াউর রহমানের কর্মকান্ডের ওপরে বিষয়ভিত্তিক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা। দলের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দেশের কয়েকজন বরণ্যে বুদ্ধিজীবী ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বক্তব্য রাখবেন বলে জানান মহাসচিব।
তিনি জানান, বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সভার বিষয়গুলো হচ্ছে, `স্বাধীনতা যুদ্ধ ও শহীদ জিয়া’, `গণতন্ত্র, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও বিএনপি’, `শহীদ জিয়া ও উতপাদন-উন্নয়নের রাজনীতি’, `স্বনির্ভর বাংলাদেশ ও অর্থনৈতিক সংস্কার’, `শহীদ জিয়ার কৃষি বিপ্লব’, `নারী ক্ষমতায় ও শিশু কল্যাণ’, `কর্মসংস্থান ও শ্রমিক কল্যাণ’, `শিক্ষা ও গণশিক্ষা’, `পল্লী বিদ্যুত ও খনিজ সম্পদ উন্নয়ন’, `স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ’, `শহীদ জিয়ার বিদেশনীতি’ এবং `শহীদ জিয়ার যুব উন্নয়ন’। প্রতিবছর জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর মহানগরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হলেও এবার প্রস্তুত করা খাদ্যের পরিবর্তনে খাদ্য সামগ্রি, বন্ত্র বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি আরো বলেন, এসব সামগ্রি বিতরণকালে কোনো মতেই কোনো সমাবেশ করা যাবে না- এটা আমরা জোর দিয়ে বলছি। কারণ এখন এই বিধান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে যেটা বলা হয়েছে এটা মেনে চলাটা আমাদের একটা দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি।
মির্জা আলমগীর বলেন, ‘‘আমরা অত্যন্ত দূঃখের সঙ্গে বলছি, কোবিড-১৯ করোনাভাইরাসের কারণে আমরা কোনো সমাবেশের মধ্য দিয়ে কোনো জমায়েত করে প্রতিবছরের মতো দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে শাহাদাত বার্ষিকী তা পালন করা সম্ভব হবো না। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, কোনো সমাবেশ বা জমায়েত না করে ভার্চুয়াল ডিকাশন, কোনো ভার্চুয়াল মিটিং করে আমরা তাকে স্মরণ করবো।” এ সময় করোনাভাইরাসের বিশিষ্ট কয়েকজন নাগরিকসহ যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত এবং করোনা ভাইরাসে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের আশু রোগমুক্তি কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব। উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর কিছু বিপদগামী সদস্যের হাতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শাহাদাত বরণ করেন।