চৌগাছায় ঘুষ হিসেবে হাকিমপুর স্কুলের সভাপতির মেয়েকে জমি লিখে অফিস সহকারীর চাকরি

0

এম. এ. রহিম, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছার হাকিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ অভিযোগের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযোগকারীরা হলেন, হাকিমপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান, জিল্লুর রহমান, ওমর আলী, মকছেদ আলী ও আমিনুর রহমান লাল্টু। লিখিত অভিযোগে তারা দাবি করেন, হাকিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির পর-পর ৪ বারের সভাপতি রবিউল ইসলাম মৃধা ও প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম নিয়োগ বাণিজ্য দুর্নীতিতে মেতে উঠেছেন। তাদের দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে স্কুলের পরিবেশ ও শিক্ষার মান দিনদিন নষ্ট হচ্ছে। ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি ১১ লাখ টাকার বাণিজ্য করে সভাপতি রবিউল ইসলাম প্রধান শিক্ষককে নিয়োগ দেন। একই বছর ৭ লাখ টাকা নিয়ে তৌহিদুজ্জামান নামে একজনকে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেন। তৌহিদুজ্জামানের নিয়োগের আগেই তার দাদা আব্দুল মাজিদ খানের ২৮ শতক জমি সভাপতির মেয়ে গুলফা পারভিন মুক্তির নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে হয়। গুলফা পারভিন মুক্তি হাকিমপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক।
এছাড়া তারা মুস্তাফিজুর রহমান নামে একজনকে নিরাপত্তা কর্মী পদে চাকরি দিয়ে ১১ লাখ ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী আফরোজা খাতুনের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাদের দুর্নীতি ও একগুয়েমির কারণে ম্যানেজিং কমিটি থেকে অভিভাবক সদস্য নাজমুল হুসাইন, আব্দুল কাদের, সরোয়ার হোসেন খান ও আমিনুর রহমান পদত্যাগ করেন। অর্থবাণিজ্য ও দুর্নীতি সামাল দিতেই ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত না করে সভাপতি গোপনে দুজন নতুন অভিভাবক সদস্য তৈরি করেছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানর বলেন, আমরা যে, অভিযোগ করেছি অবশ্যই তা শতভাগ সত্য। জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা যা লিখেছি তা সব কিছুই সত্যি। সভাপতি উপজেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের দোহাই দিয়ে আমাদেরকে দমিয়ে রাখেন। হাকিমপুর গ্রামের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি দুজনই নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে এলাকার রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাশোহারা দিয়ে ম্যানেজ করেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগগুলো মিথ্যা। দুজন অভিভাবক সদস্য নাজমুল আলম ও আব্দুল কাদের পদত্যাগ করেছিলেন। পরবর্তীতে আমরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও যশোর শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করি। শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশে মুকুল হোসেন ও মনিরুজ্জামান পলাশ নামে দুজনকে অভিভাবক সদস্য অর্ন্তভূক্ত করি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, আমার নামে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। “আমার মেয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত অফিস সহকারী তৌহিদুজ্জামানের দাদার কাছ থেকে ২৮ শতক জমি কিনেছে।” এতো মানুষ থাকতে অফিস সহকারীর দাদার জমিই আপনার মেয়ে কেনো কিনলেন ? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেনো ? কিনলে অসুবিধা কি ? । এ ব্যাপারে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।