স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে কীভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হবে?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ যখন থেকে ধারণা পাওয়া গেছে যে, বেশ দীর্ঘ দিন ধরেই লকডাউনে থাকতে হবে, তখন থেকেই ইন্টারনেটে নানা ধরণের প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেকেই ভাবছেন যে এটা আমাদের রোমান্টিক সম্পর্কের উপর কি ধরণের প্রভাব ফেলবে। এই চিন্তাগুলো মূলত সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকে সামনে আসতে শুরু করে যখন বারগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং পরস্পর থেকে দুই মিটার দূরত্ব রাখার কথা বলা হয়। কিন্তু মানসিক বিষয়টি কেমন হবে? মহামারির সময় আমাদের সম্পর্কগুলো সুখকর আর ভাল রাখতে কী করা উচিত? লকডাউনের সময় দুটো জিনিস হতে পারে; এক হয়তো সব সময়ই একসাথে থাকতে হবে অথবা এক সাথে থাকার মতো সময় মোটেই পাওয়া যাবে না।
২৪শে মার্চ যখন যুক্তরাজ্য কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জোরদার করে তখন ইংল্যান্ডের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জেনি হ্যারিস একটি বিষয়ে কথা বলেন: আর তা হল যেসব যুগলরা একসাথে বাস করে না তাদের উচিত একসাথে বসবাস করতে শুরু করা যাতে তারা তাদের সম্পর্কের দৃঢ়তা পরীক্ষা করতে পারে। আপনি যদি আপনার সঙ্গীর কাছ থেকে দূরে স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে যান তাহলে তার অভাব অনুভূত হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। আইসোলেশনের কারণে গুরুত্বপূর্ণ সরাসরি সংস্পর্শ থেকে মানুষ বঞ্চিত হয়।
ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার অধ্যাপক করি ফ্লয়েড এই বিষয়টিকে বলেছেন “স্কিন হাঙ্গার” বা সরাসরি বা শারীরিক সংস্পর্শের অভাব। একাকীত্ব ছাড়াও এর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় যে মানুষ কেন কারো সাথে কথা বলে বা ভিডিও কলে দেখেও কেন সরাসরি কাছে পাওয়ার মতো আনন্দ দেয় না। প্রিয়জনের অনুপস্থিতিতে তাদের পাঠানো কোনকিছু সহায়ক হতে পারে। ওয়েইনি স্টেট ইউনিভার্সিটির যোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক ক্যাথরিন ম্যাগুয়ের বলেন, এক্ষেত্রে পুরনো দিনের মতো হাতে লেখা চিঠি খুব ভাল কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, প্রিয়জনের স্পর্শে আসা কোন কিছু স্পর্শ করতেও ভাল লাগে। “লেখা চিঠিটি তাদের হাতে ছিল, আপনি তাদের হাতের লেখা দেখতে পারবেন, তারা যদি সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকে তাহলে আপনি তার গন্ধ পাবেন, সব কিছু মিলিয়ে এটি পরিস্থিতিকে জীবন্ত করে তোলে।”
অনেক যুগল এখন অনেক বেশি সময় ধরে একসাথে থাকছেন আবার অনেকে দীর্ঘদিন ধরে আলাদা থাকছেন। কিন্তু তাই বলে যুগল হিসেবে একসাথে থাকা কিংবা বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তারাহুরো করে নেয়া উচিত নয়। যেসব যুগলরা একে অপরের থেকে দূরে থেকে সম্পর্ক বজায় রাখে তাদের উপর করা গবেষণায় দেখা যায় যে, আলাদা বসবাসের বেশ কিছু সুবিধাও রয়েছে। যেমন, বন্ধু কিংবা পরিবারের থেকে দূরে থাকা মানেই খারাপ কিছু নয়। বাস্তব ক্ষেত্রে এক সাথে আইসোলেশনে গেলে সেখানেও কিছু চাপ তৈরি হতে পারে। “বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের সীমা পার করে ফেলছি- অনেক কিছুই অস্পষ্ট,” বলেন ম্যাগুয়ের।