যশোরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে যুবককে ঘরে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি, দু জন আটক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার কথা বলে মাগুরার এক যুবককে যশোরে এনে আটকে মুক্তিপণ দাবি করে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একটি অপরাধী চক্র। তার পরিবারের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকাও আদায় করে তারা। তবে স্থানীয় জনতা টের পেয়ে অপরাধী চক্রের দুই সদস্যকে হাতেনাতে আটক করেন। এ সময় মুক্তিপণের দাবিতে আটকে রাখা যুবককে উদ্ধারও করা হয়। যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর পোস্ট অফিসপাড়ায় গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মাগুরা সদর উপজেলার ডাঙ্গাসিংড়া গ্রামের সরোয়ার শেখের ছেলে নুর ইসলাম শেখ (২৬) তার পূর্ব পরিচিত যশোর সদর উপজেলার শাখারীগাতি গ্রামের সমশের মোল্লার ছেলে ইকরামুল হোসেনের (৩৫) কাছে মোটরসাইকেল কেনার কথা বলেন। এ সময় সুচতুর ইকরামুল তাকে জানান, তার পূর্ব পরিচিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বাজাজ পালসার মোটরসাইকেল কিনে দিতে পারবেন। ফলে তার কথায় বিশ্বাস করে গত বৃহস্পতিবার সকালে তিনি (নুর ইসলাম শেখ) তার সাথে মাগুরা থেকে যশোরে আসেন। পরে নুর ইসলাম শেখকে সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর পোস্ট অফিসপাড়ার মৃত শেকমত উল্লাহ ফরাজীর ছেলে আনোয়ার হোসেন ফরাজীর (৪৮) বাড়িতে নিয়ে যান ইকরামুল। এ সময় আনোয়ার ও ইকরামুল ওই বাড়ির একটি ঘরে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু নুর ইসলাম শেখ তাদের টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা তাকে প্রচণ্ড মারধর করতে থাকেন। এমনকি তাকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। এরই মধ্যে নরেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ মোল্লার ছেলে বাবুল আক্তার বাবু (৫২) ওই ঘরে ঢুকে নিজেকে ডিবি পুলিশের অফিসার পরিচয় দেন। এ সময় তার গায়ে ডিবি পুলিশের মত একটি কোটি ছিলো। ডিবি পুলিশের অফিসার পরিচয় দানকারী বাবুল আক্তার বাবু একটি মোবাইল ফোনে তার ছবি তোলেন এবং মুুক্তিপণের টাকা দেওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। তাদের দাবিকৃত টাকা আনোয়ার হোসেন ফারাজীর ০১৭৯২-২১৭৫৯৫ নম্বরে বিকাশে পাঠিয়ে দিতে বলা হয়। ফলে প্রাণ বাঁচাতে নুর ইসলাম শেখ মোবাইল ফোনে তার ছোটভাই শামীমকে বিষয়টি জানান এবং ওই নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দিতে বলেন। ভাইয়ের বিপদের কথা শুনে তার ছোটভাই শামীম বিকাশে ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এরপর বাকি ৪৫ হাজার টাকার জন্য অপরাধীরা নুর ইসলাম শেখকে মারপিট করতে থাকেন। এরই একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে যান। এ সময় তারা সেখানে গিয়ে ইকরামুল ও আনোয়ার হোসেন ফরাজীকে হাতেনাতে আটক করেন। তবে কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন ডিবি পুলিশের অফিসার পরিচয় দানকারী বাবুল আক্তার বাবু। স্থানীয়রা একটি ঘর থেকে মুক্তিপণের দাবিতে আটকে রাখা নুর ইসলাম শেখকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইকরামুল ও আনোয়ার হোসেন ফরাজীকে আটক এবং নুর ইসলাম শেখকে উদ্ধার করে কোতয়ালি থানায় নিয়ে যায়। পরে রাতে নুর ইসলাম শেখ কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। শুক্রবার আটক দু জনকে পুলিশ আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।