গেমিং খাতের উন্নয়ন কেন প্রয়োজন

    0

    লোকসমাজ ডেস্ক ॥ বর্তমানে বিশ্বে গেমের বাজার মূল্য ১৬০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এমনকি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির অন্যতম সম্ভাবনাময় জায়গার একটি বড় অংশ এই গেম বাজারকে কেন্দ্র করে। বিষয়টিকে মাথায় রেখেই দেশে সমান হারে বাড়ছে গেমার ও গেমের বাজার। খাতটিকে আরও বড় করতে প্রয়োজন বিদেশি বিনিয়োগ। ইতোমধ্যে বিশ্বের এই গেমের বাজার ধরতে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো কাজ করছে। এই ধারা বজায় থাকলে ১৬০ বিলিয়ন ডলারের বাজার থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে বাংলাদেশের খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না বলে মনে করছে গেম নির্মাতারা।
    বাংলাদেশে গড়ে উঠছে বেশকিছু সংখ্যক গেমিং স্টার্টআপ। এছাড়া কিছু গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে সাড়া জাগানো বেশ কিছু গেম যার রয়েছে রেকর্ড সংখ্যক ডাউনলোডার। সবচেয়ে বড় খবর হলো ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে বিশ্বের অন্যতম গেমিং প্রতিষ্ঠান উল্কা গেমস। মাত্র ২২ জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি গত এক বছরের মধ্যে নিয়োগ দিয়েছে আরও ৬৮ জন কর্মী। উল্কা গেমসের মতো বিশ্বের আরও অনেক গেমিং কোম্পানিকে বাংলাদেশে আনতে চায় সংশ্লিষ্টরা। এতে গেমিং খাতে বড় ধরনের সাফল্যের চিহ্ন রাখতে পারবে বাংলাদেশ যেখান থেকে আসবে ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই)। বড় হবে বাংলাদেশের গেমিং খাত।
    গেমিং খাত সম্পর্কে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, মোবাইল অ্যাপসের একটি বড় অংশ হলো মোবাইল গেম। বিশ্বের মোবাইল অ্যাপস ও গেমের বিশাল বাজার বাংলাদেশের অপার সম্ভামনাময়। ধীরে ধীরে মোবাইল গেমের বাজার বড় হচ্ছে তাই মোবাইল গেমের বৈশ্বিক বাজারকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্ত করতে কাজ করা হচ্ছে। বিশ্বে এখন সবথেকে জনপ্রিয় মূলত মোবাইল গেমিং সেক্টরটি। এক জরিপ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে স্মার্টফোন গেমিংয়ের বাজার দাঁড়ায় ৬৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যার মধ্যে ৫৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল স্মার্টফোন থেকে। বাকি ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ছিল ট্যাবলেট কম্পিউটার থেকে।
    অনেকেই ভিডিও গেমিংয়ের সঙ্গে অনলাইন বেটিং বা জুয়াকে মিলিয়ে ফেলছে। যার কারণে অনেক মেধাবী গেম ডেভেলপাররা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এতে তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে বিলিয়ন ডলার আয় করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই অনলাইন জুয়া, গেম ডেভেলপমেন্ট এই বিষয়গুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে আলোচনা। কিন্তু গেম আর জুয়া এক জিনিস নয় বলেই জানিয়েছেন খাতটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে উল্কা গেমসের আইনি পরামর্শক এ বি এম হামিদুল মিসবাহ বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে যখন গেমার, গেম ডেভেলপারদের বিশেষ দৃষ্টিতে দেখা হয় সেখানে আমরা আশানুরূপ জায়গায় যেতে পারিনি। মনে রাখতে হবে, গেমিং আর জুয়া এক বিষয় নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নাগরিক সমাজের উচিত বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা। এ সময় তিনি গেমিং নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির আহবান জানান। তা না হলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের গেমের এ সম্ভাবনাময় পথচলা বেশি দূর এগোবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। হামিদুল মিসবাহ আরও বলেন, বাংলাদেশের গেমের বাজার বড় হওয়ায় সেখানে ইতিবাচক চিন্তা থাকতে হবে যাতে করে সারাবিশ্বে এই খাতটিকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা যায়। বিশ্বে গেমের চাহিদা বাড়লে আমাদের বাজারও বড় করতে হবে। কিন্তু বাজার বড় করতে গিয়ে ভয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকেই জুয়ার সঙ্গে গেমিংকে গুলিয়ে ফেলেছেন। যার কারণে অনেক তরুণ ডেভেলপার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, যা এই খাতের জন্যে একটি বড় ধরনের হুমকি।