খেলার খবর

0

মুশফিক নৈপুন্যে জয়ের ধারায় ফিরলো খুলনা
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ টানা দুই ম্যাচ হারের পর মুশফিকুর রহিম-শহিদুল ইসলামের নৈপুন্যে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেটে জয়ের ধারায় ফিরলো খুলনা টাইগার্স। ঢাকার দ্বিতীয় পর্বে টুর্নামেন্টের ২২তম ম্যাচে রংপুর রেঞ্জার্সকে ৫২ রানে হারিয়েছে খুলনা। ব্যাট হাতে অধিনায়ক মুশফিক ৪৮ বলে ৫৯ রান ও বল হাতে শহিদুল ২৩ রানে ৪ উইকেট নেন। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় রংপুর। ব্যাট হাতে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি খুলনা। ৪৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় তারা। মেহেদি হাসান মিরাজ ১২, দক্ষিণ আফ্রিকার রিলি রুশো শূন্য ও শামসুর রহমান ১৩ রান করে ফিরেন। আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ভালো শুরুর পরও ২২ বলে ৩০ রান করে আউট হন।
দলীয় ৮৪ রানে শান্ত’র বিদায়ের পর পঞ্চম উইকেটে আফগানিস্তানের নাজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে ৮২ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। মারমুখী মেজাজে থাকা জাদরান ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৬ বলে ৪১ রান করে আউট হন। তবে এক প্রান্ত আগলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে শেষ ওভারে আউট হন মুশফিক। ৪৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৯ রান করেন মুশফিক। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮২ রানের বড় সংগ্রহ পায় খুলনা। রংপুরের মুস্তাফিজ ২৮ রানে ৩ উইকেট নেন। জবাবে জয়ের জন্য ১৮৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভালো শুরু হয়নি রংপুরেরও। ৪২ রানে ৩ উইকেট হারায় তারাও। তবে খুলনার বোলারদের তোপে রংপুরের পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩০ রান পর্যন্ত যেতে পারে রংপুর। দলের পক্ষে আগের ম্যাচের হিরো লুইস গ্রেগরি সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন। এছাড়া শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ১১ বলে অপরাজিত ২১ ও ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ২০ রান করেন। খুলনার শহিদুল ২৩ রানে ৪ উইকেট নেন। এই জয়ে ৬ খেলায় ৪ জয় ও ২ হারে ৮ পয়েন্ট হলো খুলনার। আর সমানসংখ্যক ম্যাচে ১ জয় ও ৫ হারে ২ পয়েন্টই থাকলো রংপুরের।

সৌম্যর ব্যাটে তাণ্ডব, তবু হার কুমিল্লার
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ কি ব্যাটিংটাই না করলেন সৌম্য সরকার! উইকেটের চারদিকে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটালেন। খেললেন চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস। কিন্তু দলকে জেতাতে পারলেন না। শেষ করতে হলো ট্রাজিক হিরো হয়ে। চলতি বিপিএলে প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান পাচ্ছেন সৌম্য সরকার। তবে ফিফটি হচ্ছিল না। এবার সেই আক্ষেপ পূরণ করলেন। আরেকটু সুযোগ পেলে তো সেঞ্চুরিটাও করে ফেলতে পারতেন। সে সুযোগ হলো না। ৪৮ বলে ৮৮ রানে অপরাজিত থাকলেন সৌম্য। আর তার এমন ইনিংসের পরও রাজশাহী রয়্যালসের কাছে ১৫ রানের হার দেখতে হলো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে। ১৯১ রানের বড় লক্ষ্য। শুরুটা যেমন হওয়ার দরকার ছিল, তেমনটা পায়নি কুমিল্লা। দুই ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি (১৫ বলে ১২) আর স্টিয়ান ফন জিল (২৩ বলে ২১) টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে পারেননি। ডেভিড মালানও ৫ বলে মাত্র ৩ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন। সতীর্থদের এমন ব্যর্থতার মাঝেও নিজের সহজাত ব্যাটিংটাই করে যাচ্ছিলেন সৌম্য সরকার। শুরুই করেন দুই বাউন্ডারি দিয়ে। পরে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের আগ্রাসন চলেছে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু ওই যে সতীর্থদের ব্যর্থতা! তারা তো বল নষ্ট করে দলকে বিপদে ফেলে গেছেন আগেই। সৌম্যর ইনিংসটা তাই দলের পরাজয়ের ব্যবধানটাই যা কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিধ্বংসী সৌম্য অপরাজিত থাকেন ৪৮ বলে ৮৮ রানে, যে ইনিংসটি তিনি সাজান ৫টি চার আর ৬টি ছক্কায়। এর আগে শুরুটা করেছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব আর শেষ করেন শোয়েব মালিক ও অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। এ তিন উইলোবাজের উত্তাল ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে ১৯০ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় রাজশাহী রয়্যালস। টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা। তবে তাদের এ সিদ্ধান্তকে যথাযথ প্রমাণ করতে দেয়নি রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। কুমিল্লার বোলারদের রীতিমত পাড়া মহল্লামানের বানিয়ে ছাড়েন মালিক-আফিফরা। ব্যাট হাতে ফিফটি পান শোয়েব মালিক। ফিফটির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেন আফিফ হোসেন ও আন্দ্রে রাসেল। ঝড় তোলা ব্যাটিংয়ে শেষ ৭ ওভারে ৮৪ রান যোগ করেন রাসেল ও মালিক। আফিফ ৪৩ ও মালিক ৬১ রানে আউট হলেও রাসেল ৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুটা দারুণ করেছিলেন দুই ওপেনার আফিফ ও লিটন দাস। প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৫০ রান যোগ করে তাদের জুটি ভাঙে ৫৬ রানের মাথায়। ভালো শুরুর পর সানজামুল ইসলামের বোলিংয়ে আলগা শটে ক্যাচ আউট হন লিটন, করেন ১৯ বলে ২৪ রান। একই পরিণতি ঘটে আফিফের সম্ভাবনাময় ইনিংসেরও। সৌম্য সরকারের বোলিংয়ে সরাসরি বোল্ড হওয়ার আগে ৬ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩০ বলে ৪৩ রান করেন এ বাঁহাতি তরুণ। দলের রান তখন মাত্র ৮০। বেশি কিছু করতে পারেননি রবি বোপারা। আউট হয়ে যান ১২ বলে ১০ রান করে। এরপরই কুমিল্লার বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরান রাসেল ও মালিক। উইকেটের চারদিকে শট খেলে দুজন মিলে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। ইনিংসের একদম শেষ বলে রান আউট হন মালিক। ৫টি চারের সঙ্গে ৩ ছয়ের মারে ৩৮ বলে ৬১ রান করেন তিনি। অন্যদিকে অধিনায়ক রাসেল ৪ ছয়ের মারে ২০ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন।

দানিশ কানেরিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইনজামাম
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইনজামাম-উল-হক বলেছেন, অমুসলিম বলে যে দানিশ কানেরিয়ার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে বা তাকে যথাযথ সুযোগ দেয়া হয়নি এমন কোনো বিষয় ছিল না। আমার অধীনেই দানিশ কানেরিয়া সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে। আমরা (পাকিস্তানিরা) ছোট্ট হৃদয়ের মানুষ নই যে অমুসলিম বলে তার সঙ্গে খারাপ কিছু করব। ইউটিউব চ্যানেলে পাকিস্তানের সাবেক এ অধিনায়ক আরও বলেন, যখন আমরা শারজায় সফর করতাম, ভারতীয় ও পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা একই হোটেলে থাকত এবং আমি প্রায়ই খেলোয়াড়দের রুমে গিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মজা করতাম এবং একসঙ্গে খেতাম। ইনজামাম আরও বলেন, মোশতাক আহমেদ শৈশবকাল থেকেই আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। কিন্তু আমি দানিশ কানেরিয়াকে দলে বাছাইয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছিলাম কারণ সে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ এবং মুশতাককে আমার অধিনায়কত্ব থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, খেলোয়াড়দের কেবল নামাজ দিয়েই মূল্যায়ন করা হয়নি। তাদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই দলে সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শোয়েব আখতার সম্প্রতি বলেছেন, দানিশ কানেরিয়া হিন্দু হওয়ার কারণে জাতীয় দলে যথাযথ সুযোগ পাননি। শোয়েব আখতারের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পর দানিশ কানেরিয়া পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম পিটিভি স্পোর্টসকে বলেন, শোয়েব সত্যি বলেছেন। আমি হিন্দু হওয়ায় পাকিস্তান ক্রিকেট দলের যেসব সদস্যরা আমার সঙ্গে কথা বলতেন না তাদের নাম জানাব। এতদিন মুখ খোলার মতো সাহস পাইনি। কিন্তু এবার বলব। পাকিস্তানের হয়ে ৬১টি টেস্ট ও ১৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ২৭৬ উইকেট শিকার করেন দানিশ কানেরিয়া। তবে ২০০৯ সালে ডারহামে এসেক্সের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটে স্পট ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত হন কানেরিয়া। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আজীবন নিষেধাজ্ঞা দেয় ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।

রাসেলের ‘৪০০’ ছক্কা
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার্ডহিটার আন্দ্রে রাসেল। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ২১ বলে ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন তিনি। এ পথে ৪টি ছক্কা মেরেছেন রাজশাহী রয়্যালস অধিনায়ক। তাতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪০০ ছক্কার এলিট ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন ক্যারিবীয় ব্যাটার। শনিবার মিরপুরে খেলতে নামার আগে রাসেলের নামের পাশে ছিল ৩৯৭টি ছক্কা। এদিন কুমিল্লা পেসার আল-আমিন হোসেনকে সোজা ব্যাটে ছয় মেরে ৪০০ ছক্কার ল্যান্ডমার্কে পৌঁছান তিনি। বিশ্বের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে এ কীর্তি গড়লেন দ্রি রাস। এর আগে এ মাইলফলক অতিক্রম করেন ৪ ব্যাটসম্যান। ৪০০ ম্যাচে ৯৬৬টি ছক্কা মেরে সবার ওপরে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। ৪৯৬ ম্যাচে ৬৪৭টি ছক্কা হাঁকিয়ে দ্বিতীয় স্থানে তার সতীর্থ কাইরন পোলার্ড। ৩৭০ ম্যাচে ৪৮৫টি ছয় মেরে তৃতীয় নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।আর ৩১৭ ম্যাচে ৪৩১টি ছক্কা মেরে চার নম্বরে অস্ট্রেলিয়ান শেন ওয়াটসন

১৪৮ রানেই অলআউট নিউজিল্যান্ড
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ পেট কামিন্সের আগুনঝরা বোলিংয়ে কুপোকাত নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রানেই অলআউট ব্লাক ক্যাপসরা। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে পার্থে ২৯৬ রানে হেরে যাওয়া নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টেও চরম বিপর্যয়ে পড়েছে। আগের টেস্টে দুই ইনিংসে ১৬৬ ও ১৭১ রানে অলআউট হওয়া নিউজিল্যান্ড চলতি মেলবোর্ন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার করা ৪৬৭ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৮ রানে অলআউট। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন ওপেনার টম লাথাম। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে পেট কামিন্স ১৭ ওভারে মাত্র ২৮ রান খরচ করে ৫ উইকেট শিকার করেন। ১৫ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন জেমস পেটিনসন। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ট্রাভিস হেডের (১১৪) সেঞ্চুরি আর স্টিভ স্মিথ (৮৫), টিম পেইন (৭৯) ও লাবুসেনের (৬৩) ফিফটিতে ৪৬৭ রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ৩১৯ রানে এগিয়ে থেকে শনিবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান সংগ্রহ করেছে অস্ট্রেলিয়া। মেলবোর্ন টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে অস্ট্রেলিয়ার লিড ৪৫৬ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ১ম ইনিংস- ৪৬৭/১০ (ট্রাভিস ১১৪, স্মিথ ৮৫, পেইন ৭৯, লাবুসেন ৬৩, ওয়ার্নার ৪১; নেইল ওয়াগনার ৪/৮৩, টিম সাউদি ৩/১০৩)। এবং ২য় ইনিংস-১৩৭/৪ (ওয়ার্নার ৩৮, জো বার্ন ৩৫, লাবুসেন ১৯, স্মিথ ৭, হেড ১৫*, ট্রাভিস ১২*)।
নিউজিল্যান্ড: ১ম ইনিংস-১৪৮/১০ (লাথাম ৫০; কামিন্স ৫/২৮, পেটিনসন ৩/৩৪)।