কারাবন্দি বিএনপি নেতা হলেন পুলিশের মামলার আসামি!

0

খুলনা ব্যুরো ॥ খুলনায় কারাগারে বন্দি বিএনপি নেতাকে পুলিশের উপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় আসামি করা হয়েছে। শনিবার ( ১ এপ্রিল)  রাতে খুলনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অজিত কুমার দাস বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারভুক্ত বিএনপির ওই নেতা গাজী আফসার (৪৫) খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য।
গত শনিবার রাতে খুলনা থানার এসআই অজিত কুমার দাসের দায়েরকৃত মামলায় দেখা যায়, গাজী আফসারের নাম রয়েছে ৪০ নম্বরে। এ মামলায় তার পিতার নাম অজ্ঞাত এবং ঠিকানা দেওয়া হয়েছে জিন্নাপাড়া ৪র্থ গলি, থানা লবণচরা, জেলা খুলনা।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা জানান, গাজী আফসার এক সময় নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন। একমাস আগে নগরীর লবণচরা থানা পুলিশ একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে খুলনা থানায় চালান দেয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। বিএনপি নেতা মনা আরও জানান, ইতোমধ্যে হাইকোর্ট থেকে গাজী আফসারের জামিন হয়েছে। কিন্তু এখনো উচ্চ আদালতের কাগজপত্র না পৌঁছায় তিনি জামিনে মুক্তি পাননি। কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় গাজী আফসারের বিরুদ্ধে পুলিশ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করেছে। ইতোপূর্বে পুলিশ এ রকম আরও অনেক মিথ্যা মামলা দায়ের করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানি করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
গাজী আফসার উদ্দিনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান তুষার বলেন, গত ২ মার্চ খুলনা থানা পুলিশ গাজী আফসার উদ্দীনকে একটি কথিত নাশকতা মামলায় গ্রেফতার করে। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত তার জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করেন। ৩ মার্চ থেকে আফসার উদ্দিন কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে থেকে তিনি কীভাবে পুলিশের ওপর হামলা করলেন?
খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে মামলা হওয়ায় হয়তো তার নাম (গাজী আফসার) মামলার এজাহারে এসে গেছে। তদন্তের পর তার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আমরা দেখবো।
উল্লেখ্য, গত শনিবার বিকেলে নগরীর কেডিঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি শুরুর মুহূর্তে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির ১২ জন ও পুলিশের ১০জন সদস্য আহত হন বলে দাবি করা হয়। পুলিশ ৩৫ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৮ নেতাকর্মীকে আটক করে। ওই দিন রাতে খুলনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) অজিত কুমার দাস বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বিএনপির ৮০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।