বিটিভির নতুন কুঁড়ির সমন্বয় সভা যশোরে

0

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জেলা প্রশাসক মো. আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বিটিভির ‘নতুন কুঁড়ি’ শুধু প্রতিযোগিতা নয়, এটা একটা সাংস্কৃতিক আন্দোলন। আজকে যারা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বড় বড় মুখ, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব, তাদের অনেকেরই যাত্রা শুরু এই ‘নতুন কুঁড়ি’ থেকে।

সোমবার বিকেলে জেলা কালেক্টরেট ভবনের অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি’র) ‘নতুন কুঁড়ি-২০২৫’ প্রতিযোগিতার সফল বাস্তবায়নে অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে শিশুশিল্পীদের প্রতিভা অন্বেষণে ‘নতুন কুঁড়ি’ অনুষ্ঠান চালু হয়। দীর্ঘদিন চলার পর ২০০৬ সালে হঠাৎ তৎকালীন সরকার অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘ ২০ বছর বন্ধ থাকার পর আবার অনুষ্ঠানটি চালু হতে যাচ্ছে।

এ সময় তিনি অত্যন্ত আবেগঘনভাবে জানান, তার ইচ্ছা যশোর থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করুক, পুরস্কার জিতুক এবং আগামী দিনের জন্য নিজেকে মেলে ধরুক। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল সম্ভাবনাময়ী শিশু এবং তাদের অভিভাবক, শিক্ষকদের শিশুদের অন্তর্ভুক্তির জন্য ফরম পূরণের আহ্বান জানান। অনলাইনে, ইমেইলে ও ডাকযোগে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর তারিখ পর্যন্ত এবং যদি কেউ ব্যর্থ হয়, তারা আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে স্পট রেজিস্ট্রেশন করে অডিশনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এ সময় অংশীজনদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘নতুন কুঁড়ি’ এক সময় ছিল সবার আকর্ষণ-সবার স্বপ্ন। সে সময় টেলিভিশন বলতে বিটিভি বোঝাতো আর ‘নতুন কুঁড়িতে’ চান্স পাওয়া সৌভাগ্য মনে করা হতো। দীর্ঘ ২০ বছর সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণের এমন চমৎকার প্লাটফর্মটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন নানা কারণে অনেকেই এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে চায়। আবার অসংখ্য অভিভাবক ও শিশু রয়েছে, যাদের আকাক্সক্ষার জায়গা এটি। অনেক শিশুর অভিভাবক অধীর আগ্রহের সঙ্গে ‘নতুন কুঁড়ির’ অপেক্ষায় রয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য সর্বস্তরের শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে তারা সাধুবাদ জানান। তাছাড়া বন্ধ থাকার পর বিটিভি কর্তৃপক্ষ এ জাতীয় সৃজনশীল মেধা ও প্রতিভা অন্বেষণের আয়োজন করার জন্যও বিটিভিকে ধন্যবাদ জানান অংশগ্রহণকারীরা।

সভায় জানানো হয়, অঞ্চলভিত্তিক অডিশনের জন্য খুলনা বিভাগের যশোর, নড়াইল, মাগুরা ও ঝিনাইদহের শিশুদের বাছাই পর্বের জন্য যশোরকে মনোনীত স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই বাছাই রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে নিজ নিজ স্কুল, সাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অভিভাবক ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। অভিনয়, আবৃত্তি, সঙ্গীত, গল্প/কৌতুক, হামদ-নাত ও নৃত্য শাখায় বয়সভিত্তিক দুটি গ্রুপে বিভক্ত করে এই প্রতিযোগিতা হবে। যশোর থেকে বিজয়ীরা বিভাগীয় পর্যায়ে অংশ নিতে পারবে। সেখান থেকে বিজয়ীদেরকে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিতে হবে। ৮ বিভাগের অন্তত ১০ হাজার ২৬০ জন ‘ইয়েস কার্ড’ ধারীরা জাতীয় পর্যায়ে চূড়ান্ত বাছাইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিবুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) খান মাসুম বিল্লাহ, প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, দৈনিক লোকসমাজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনোয়ারুল কবির নান্টু, সাংবাদিক নেতা আকরামুজ্জামান, নূর ইসলামসহ সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ।