সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাব ঘিরে উত্তপ্ত যশোর বিএনপি-জামায়াতের পৃথক বিক্ষোভ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের রাজনৈতিক অঙ্গনে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে এখন নতুন আলোচনার বিষয় আসন পুনর্বিন্যাস। একটি মহল থেকে আসা এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো।

সীমানা অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে রোববার দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বিএনপি, আর বিকেলে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী। তাদের অভিযোগ, এই প্রস্তাব নির্বাচন বানচালের একটি ষড়যন্ত্র।

রোববার দুপুরে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের বিপুল সংখ্যক সাধারণ ভোটার ও বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন পরিবহনযোগে যশোর শহরে সমবেত হন। এরপর সার্কিট হাউজ এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে তারা জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করেন। ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ।

ঘেরাও চলাকালে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, ‘দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। অথচ এখন একটি চক্র নির্বাচনী প্রক্রিয়া বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ষড়যন্ত্র করে যশোরের নির্বাচনী সীমানা পুনর্বিন্যাস করতে চাইছে, যা আসন্ন নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।’

তারা আরও বলেন, সুকৃতি কুমার মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে যশোর-৬ আসনের পুনর্বিন্যাসের জন্য একটি আবেদন করেছেন, যা “ষড়যন্ত্রমূলক”। কর্মসূচি শেষে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর একটি স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।

একই দিনে বিকেলে শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াতে ইসলামী। জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলের নেতৃত্বে মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জজকোর্ট মোড়ে এসে শেষ হয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জামায়াত নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ‘আসন পুনর্বিন্যাসের নামে চিরায়ত নির্বাচনী সংস্কৃতি ধ্বংসের অপচেষ্টা চলছে।’

তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যদি সীমানা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে যশোরবাসী কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তা প্রতিহত করবে।’ কর্মসূচির আগে তারাও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন। সমাবেশে জেলার আট উপজেলার জামায়াত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৬ আগস্ট বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডল প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর একটি আবেদন করেন। এতে প্রস্তাবিত ৯০ নং যশোর-৬ নির্বাচনী আসনে অভয়নগর উপজেলা, মণিরামপুরের ছয়টি ইউনিয়ন এবং কেশবপুরের তিনটি ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে জেলার বেশ কয়েকটি আসনে বড় ধরনের সীমানা পরিবর্তন ঘটবে, যা এলাকাবাসীর তীব্র আপত্তির মুখে পড়েছে।

সীমানা পরিবর্তনের এই সম্ভাব্য প্রস্তাব ঘিরে যশোরের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিবাদে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য সংগঠন।