কেশবপুরে জলাবদ্ধ ৪৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শ্রেণি কক্ষেও পানি, কমেছে শিক্ষার্থী

0

জয়দেব চক্রবর্তী, কেশবপুর (যশোর) ॥ সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও নদীর উপচেপড়া পানিতে কেশবপুরে ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদানে ব্যাহত হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে স্কুল ও মাদ্রাসার মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা জহির উদ্দীন বলেন, সম্প্রতি ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে গেছে। ১০টি বিদ্যালয়ের মাঠ প্লাবিত হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেখ ফিরোজ আহমেদ বলেন, উপজেলার ২৫টি মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও মাদ্রাসা প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের মাঠও প্লাবিত হয়। যা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও নদ নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুর পৌরসভাসহ ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেক স্কুলের শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান নিতে হচ্ছে অন্যত্র। বন্যার কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, সম্প্রতি জলাবদ্ধতায় তাদের ২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে।

উপজেলার আলতাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা বাবু বলেন, পানি স্কুলের ৪টি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ায় ক্লাস নিতে হচ্ছে অন্য স্থানে। স্কুলের পাশে একটি ঘরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে।

উপজেলার সুজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা বলেন, প্রায় ১ মাস ধরে তার স্কুলের মাঠে পানি জমে রয়েছে। বিদ্যালয়ের টিনশেডের ৪টি শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে গেছে। তিনি স্কুলে খেলার মাঠ উঁচু করার দাবি জানান।

মধ্যকুল মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কফিল উদ্দীন বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে ৩টি কক্ষে পানি ঢুকে গেছে। মাদ্রাসার মাঠ পানিতে থই থই করছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, অন্তত ২৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। শতাধিক পরিবার যশোর চুকনগর সড়কের পাশে টং ঘর বেঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য তিন শ প্যাকেট শুকনো খাবার ও মাত্র ৫ টন চাল পাওয়া গেছে।

কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার জানান, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য নুরানিয়া স্লুইস গেট হতে বড়েঙ্গা পর্যন্ত নদের এক পাশ দিয়ে নালা করা হচ্ছে। এছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে বড়েঙ্গা হতে হরিহর নদের ৪ কিলোমিটার এবং বড়েঙ্গা ত্রিমোহনা হতে আপার ভদ্রার ৩ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার খনন কাজ চলমান রয়েছে।