যশোরে করোনার পাশাপাশি চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু

0

বি এম আসাদ ॥ যশোরবাসিকে কয়েকদিন ধরে তোলপাড় করেছিল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)। যে আতঙ্ক এখনো কাটেনি মানুষের মনে। এ পরিস্থিতিতে আবার চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু ভাইরাস। এডিস মশা বাহিত এ ডেঙ্গু ভাইরাসে যশোরে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যশোর সিভিল সার্জন অফিসে তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮ টা হতে মঙ্গলবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত যশোর ৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ১ জন সুস্থতা লাভ করেছেন।

বর্তমানে ১জন যশোর ২৫০শয্যা হাসপাতাল, ৪ জন অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ও ২জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া চলতি বছরের ১ জানুয়ারি হতে ২৪ জুন পর্যন্ত যশোর জেলায় সর্বমোট ৩০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের ভিতর ২৩ জন সুস্থতা ফিরে পেয়েছেন। খুলনা বিভাগের অন্য কোন জেলায় এখনো ডেঙ্গু রোগী নেই। আক্রান্তদের সকলেই স্থানীয়ভাবে এডিস মশার কামড়ে আক্রান্ত হন বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা, বিশেষ করে বর্ষাকালে এডিস মশা প্রভাব বৃদ্ধি পায়। মশারি ছাড়া রাতে ঘুমালে মশার কামড়ে এ ডেঙ্গু রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বাড়ির পাশে ছোট ছোট পাত্র, নারিকেলের ছোঁবড়া, টায়ার কিংবা পলিথেনসহ বিভিন্ন পাত্রে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। ওই ডিম থেকে যে লার্ভা জন্ম নেয়। এ লার্ভা দুই/তিন দিনের ভিতর অন্য পূর্ণরূপ নেয়।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যশোরে সাড়ে ২৫ হাজার লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্তদের ভিতর মৃত্যুবরণ করেন ১ হাজার ৭ জনের বেশি। বিভাগের ১০ জেলায় এ রোগীর সংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম। চলতি বছর বিভাগের অন্য জেলায় করোনা আক্রান্ত না হলেও যশোর জেলায় ৪ জন নতুন করে করনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের ভেতর ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে বিভাগের ১০ জেলার ভেতর একমাত্র যশোরে রয়েছে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবার প্রস্তুতি। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রয়েছে ৬ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে। আরো ৬৮ টি শয্যা প্রয়োজন মোতাবেক চালু করার প্রস্তুতি রয়েছে। সব মিলে জেলায় সরকারি হাসপাতালে ৭৪ টি শয্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। রয়েছে ১০ শয্যা বিশিষ্ট চিকিৎসার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। আছে ১টি আরটিপিসিআর ল্যাব, ৮শ ৭৮টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ও ৯৮ টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। এছাড়া যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ৪ হাজার ৫শ করোনা প্রতিরোধক টিকা (ভ্যাকসিন) ও যশোর পৌরসভায় ২ হাজার ৬০টি করোনা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন রয়েছে। সাদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে থাকা করোনা টিকার সবটাই মানুষকে দেয়া হলেও এখানে যশোর পৌরসভায় মজুদ থাকা একটিরও ব্যবহার হয়নি। সংশিষ্টরা জানিয়েছেন, এ ভ্যাকসিন নিতে কেউ না আসার কারণে কাউকে দেয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মুজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, প্রস্তুতি আছে। যশোর জেলায় সব ধরনের রোগের প্রভাব বেশি। তাই সেখানে আগেভাগে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মাসুদ রানার যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যশোর জেলায় রোগও বেশি। প্রস্তুতিও বেশি। এ প্রস্তুতি খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে অন্য কোন জেলায় নেই বলে জানিয়েছেন, সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মাসুদ রানা।