যশোর শিক্ষা বোর্ডে ঝরে পড়েছে ১৮ হাজার পরীক্ষার্থী, বেড়েছে কেন্দ্র, থাকছে না ভেন্যু 

এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ২৬ জুন

0

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী বৃহস্পতিবার থেকে যশোর বোর্ডসহ দেশের সব শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বাংলা আবশ্যিক ১ম পত্রের মাধ্যমে এদিন যশোর বোর্ডের ২৪০টি কেন্দ্রে একযোগে এ পরীক্ষা শুরু হবে। চলতি বছর বোর্ডে ৫৭৫টি কলেজের ১ লাখ ১৬ হাজার ৩১৭ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার ৯টি পরীক্ষা কেন্দ্র বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে যশোর বোর্ড এবার বাতিল করেছে ৪৫টি ভেন্যু কেন্দ্র। এছাড়া এবার এইচএসসি থেকে ঝরে পড়েছে প্রায় ১৮ হাজার পরীক্ষার্থী।

যশোর শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র রয়েছে ৫৭ হাজার ৮৪৫ জন এবং ছাত্রী রয়েছে ৫৮ হাজার ৪৭২ জন। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২২ হাজার ৭৭ শিক্ষার্থী, মানবিক বিভাগে ৮১ হাজার ৪৭৬ শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১২ হাজার ৭৬৪ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এবার প্রাইভেট পরীক্ষা দিচ্ছে ৩৩ জন এবং মানোন্নয়নের জন্য পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২৭৩ জন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনিয়মিত পরীক্ষার্থী রয়েছে ২৯ হাজার ৮০৩ জন এবং নিয়মিত পরীক্ষার্থী মাত্র ৮৬ হাজার ২০৮ জন।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের আওতায় ২৪০টি কেন্দ্রে অংশ নেবে ৫৭৫টি কলেজের পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে খুলনার ৪৬ কেন্দ্রে অংশ নেবে ১০৬ কলেজের পরীক্ষার্থী, যশোরের ৫০ কেন্দ্রে অংশ নেবে ১১১ কলেজের পরীক্ষার্থী, বাগেরহাটের ২১ কেন্দ্রে অংশ নেবে ৪৫ কলেজের পরীক্ষার্থী, সাতক্ষীরার ২৩টি কেন্দ্রে অংশ নেবে ৬৯ কলেজের পরীক্ষার্থী, কুষ্টিয়ার ২৩ কেন্দ্রে অংশ নেবে ৬৬ কলেজের পরীক্ষার্থী, চুয়াডাঙ্গার ১২ কেন্দ্রে অংশ নেবে ২৬ কলেজের পরীক্ষার্থী, মেহেরপুরের ৭ কেন্দ্রে অংশ নেবে ২১ কলেজের পরীক্ষার্থী, নড়াইলের ১১ কেন্দ্রে অংশ নেবে ২৩ কলেজের পরীক্ষার্থী, ঝিনাইদহের ২৭ কেন্দ্রে অংশ নেবে ৭৪ কলেজের পরীক্ষার্থী ও মাগুরার ২০ কেন্দ্রে অংশ নেবে ৩৪ কলেজের পরীক্ষার্থীরা।

যশোর শিক্ষা বোর্ড সূত্রে আরও জানা গেছে, কেন্দ্রের ভেন্যু প্রথা বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে নিজ প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের নিজ কেন্দ্রের ভেন্যুতে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে না। এতে করে পরীক্ষার কেন্দ্রে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি থাকবে না বলে মনে করে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এদিকে, ভেন্যু প্রথা বাতিল করায় এবার ৬টি কেন্দ্র বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থী কমেছে। শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির ঘাটতি থাকতে পারে বলে মনে করছে বোর্ড। এজন্য হয়তো তারা অংশ নিচ্ছে না। নকলমুক্ত সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। একাধিক ভিজিল্যান্স টিম দায়িত্ব পালন করবে।

পরীক্ষা সুষ্ঠু পরিবেশে গ্রহণের লক্ষ্যে ১ জুন থেকে ১০ জেলার পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় সংখ্যক মূল উত্তরপত্র, ব্যবহারিক উত্তরপত্রসহ আনুষঙ্গিক যাবতীয় মালামাল সরবরাহ শুরু হয়েছে। কেন্দ্র সচিবদের সাথে মতবিনিময় করে পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নকল ও অনিয়মকারীদের কোনো ধরণের ছাড় দেওয়া হবে না। নকলের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান থাকবে। ২১ জুনের মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রের যাবতীয় মালামাল সরবরাহ সম্পন্ন করা হয়েছে।

পরীক্ষায় এবার ডিভাইসযুক্ত ইলেকট্রনিক্স ঘড়ি ব্যবহার করা যাবে না, কাঁটাওয়ালা ঘড়ি ব্যবহারের প্রচলন করেছে বোর্ড এবং নির্দিষ্ট মডেলের ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সুযোগ দিতে কেন্দ্রসচিবদের জানানো হয়েছে, একইসাথে বোর্ডের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। নকলমুক্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ আশা করে, চমৎকার পরীক্ষা অনুষ্ঠানে কোনো অসুবিধা হবে না।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মতিন জানান, বৃহস্পতিবারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩১৭ জন পরীক্ষার্থী। গতবছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন। ২০২৩ সালে এসএসসি পাস করে ১ লাখ ৩৪ হাজার ২১৩ জন, তাদেরই এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও অংশ নিতে যাচ্ছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩১৭ জন। ফলে ২ বছরে ঝরে পড়েছে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী।