বিদেশি হস্তক্ষেপমুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন অত্যন্ত জরুরি

যশোরে জামায়াতের রুকন সম্মেলনে গোলাম পরোয়ার

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেছেন, দেশের জনগণের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এমন নির্বাচন হতে হবে যেখানে কোনো বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ থাকবে না। দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বিদেশি হস্তক্ষেপমুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন অত্যন্ত জরুরি। তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে গণতন্ত্রকে ধ্বংস এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছেন।’

শনিবার যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত জামায়াতে ইসলামীর জেলা রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু শেখ হাসিনা একজন খুনি, দুর্নীতিবাজ, চোর, মানবতাবিরোধী। তার নামে রেড অ্যালার্ট জারিসহ ওয়ারেন্ট ইস্যু এবং দুই শতাধিক মামলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিচার চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে স্বীকৃত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উচিত শেখ হাসিনার মতো অপরাধীকে আশ্রয় না দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা। এমন অপরাধীকে আপনারা আশ্রয় দিয়ে স্বাধীনতার কথা, মূল্যবোধের কথা আর প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ভাবের কথা বলবেন এগুলো আপনার মুখে মানায় না।’

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কোনো বিদেশি কিংবা স্বার্থান্বেষী শক্তি যদি আগামী নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আরেকটি গণ-অভ্যুত্থান গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত দিয়েও সেটি প্রতিরোধ করতে হবে।’

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা সব সময় সবার অংশগ্রহণে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চেয়ে এসেছি। তবে এই মুহূর্তে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে কিছু বলতে চাই না। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলছি, খুনিদের বিচার এবং প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক সংস্কার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এই সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্ব অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের। তারা যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করে একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেন। তাহলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তাতে কোনো আপত্তি থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও জাতি হিসেবে আমরা এখনো ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি। আজও কিছু মীমাংসিত বিষয়কে আবার সামনে এনে জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে। জাতিকে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র ও ধর্মীয়-নৈতিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সমাজ উপহার দেওয়ার লক্ষ্যেই জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মো. আজিজুর রহমান ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।