কলেজছাত্রী দোলার আত্মহত্যা প্রেমিকের পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হোয়াটসঅ্যাপের শেষ চ্যাটে প্রেমিককে লেখা হয়েছিল, ‘মৃত্যু ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই।’ সঙ্গে ছিল একটি সিলিং ফ্যানের ছবি। যেই ফ্যান থেকেই উদ্ধার হয় এইচএসসি পরীক্ষার্থী দোলা মন্ডলের ঝুলন্ত লাশ। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা নিশ্চিত হলেও দোলার প্রেমিকের পরিচয় এবং তার ভূমিকা কী ছিল সেই রহস্য উদঘটনের পথেই হাটছে পুলিশ।

যশোর সরকারি মহিলা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী দোলা মন্ডলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয় শুক্রবার রাতে শহরের মাইকপট্টিস্থ ভাড়া বাড়ির কক্ষ থেকে। গতকাল শনিবার তার লাশের ময়নাতদন্ত হয়। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শাকিরুল ইসলাম কলেজছাত্রীর লাশের ময়না তদন্ত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, দোলার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। প্রাথমিকভাবে তারও ধারণা এটি আত্মহত্যা। ভিসেরা রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

কোতয়ালি থানা পুলিশের এস.আই পায়েল কুন্ডু জানান, দোলার বোন অন্তরা মন্ডল অথৈর কাছ থেকে জানতে পেরেছেন বাঘারপাড়ার ভিন্ন ধর্মের এক যুবকের সাথে দোলা মন্ডলের প্রেমজ সম্পর্ক ছিলো। দোলা প্রেমিকের কথা মতো চলতেন। পরিবারের কারো কথা শুনতেন না। প্রেমিকের কথা মতো চলার কারণে তার বোন আজ মারা গেছে বলে অথৈর দাবি। তবে দোলা মণ্ডলের প্রেমিকের নাম পুলিশ এখনো জানতে পারেনি।

এসআই পায়েল কুন্ডু জানান, তারা দোলা মণ্ডলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষা করে দেখতে পান, গত ১২ জুন বেলা পৌনে ৩টার দিকে দোলার ড্রিম নামে সেভ করে রাখা একটি মোবাইল ফোন নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটে লেখা ছিলো, মৃত্যু ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই। এছাড়া সেখানে একটি সিলিং ফ্যানের ছবি দিয়েছিলেন তিনি।

এ কারণে তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, গত ১২ জুন প্রেমিকের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করার পরই আত্মহত্যা করেন দোলা। যে কারণে মৃতদেহ থেকে গন্ধ বের হচ্ছিলো। পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, দোলা মন্ডলের মৃত্যুর ঘটনায় কোতয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। দোলার কাকা পঙ্কজ মন্ডল জানান, তিনি জানেন না তার ভাইঝি কেন মারা গেছেন।

এদিকে যে ভবনে দোলা ভাড়া ছিলেন সেই ভবনের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নৈশকালীন কর্মী জানিয়েছেন, প্রায় দুই মাস আগে এক রাতে দোলা তাকে অনুরোধ করেছিলেন যেন নিচ তলার প্রবেশ পথের কলপসিবল গেটে তালা না দেন, কারণ তার “হাজবেন্ড” আসবেন। এই তথ্যগুলো দোলার মৃত্যুর কারণ নিয়ে আরও ধোঁয়াশা তৈরি করেছে।

দোলা মন্ডল বাঘারপাড়া উপজেলার দেবখালি গ্রামের দুবাই প্রবাসী বিপ্লব মন্ডলের কন্যা। তিনি যশোর শহরের শহীদ সড়কের মাইকপট্টির শিকদার টাওয়ারের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।