কালীগঞ্জে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত আরও এক ভাইয়ের মৃত্যু

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামে দুপক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত ইউনুস আলী (৬২) নামে আরো একজন মারা গেছেন। বুধবার সকালে যশোরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ইউনুসের মৃত্যুর পর নাকোবাড়িয়া, কোলা বাজার পারখালকোলা, তালিয়ান, নাটোপাড়া ও গুল্লা গ্রামে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

ইউনুস আলী উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামের মৃত হবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি গত রোববার সংঘর্ষে নিহত মহব্বত আলীর বড় ভাই। একই পরিবারের দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, গত রোববার (১ জুন) কালীগঞ্জের জামাল ইউনিয়নের পারখালকোলা গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আরিফ ও নজরুল মোল্লা পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মহব্বত আলী (৫৮) নামে এক জনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হামলা ঠেকাতে গেলে মহব্বত আলীর বড় ভাই ইউনুস আলীকেও কুপিয়ে জখম করে অস্ত্রধারীরা। গুরুতর আহত ইউনুস আলী যশোরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এদিকে মহব্বত আলী হত্যার ঘটনায় তার ছেলে এনামুল হক মঙ্গলবার বিকেলে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কালীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ৫৮ জনের নামে এ মামলা করা হয়। হত্যা মামলায় পুলিশ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।

সূত্র জানায়, এলাকার কোলা বাজারের আধিপত্য ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আরিফ ও জলিল পক্ষের মধ্যে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোলা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শুকুর আলীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। শুকুর আলীকে দেখতে এলে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সরোয়ার হোসেন মোল্লাকেও কোলা বাজারের ব্যাংকের সামনে কুপিয়ে আহত করা হয়। হামলার পর কোলা বাজারের নিয়ন্ত্রণ নেন যুবদল নেতা আরিফ ও জলিল রানা।

গত বৃহস্পতিবার (২৮ মে) সংঘর্ষে নিহত মহব্বতের ছেলে মুস্তাফিজুর রহমানকে মারধর করে আরিফ পক্ষ। এরপর থেকে কোলা ইউনিয়নে দুইপক্ষের মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই বিরোধে এলাকার সন্ত্রাসী গোপালপুর গ্রামের ঘ্যানা, বাগুটয়িা গ্রামের মুসা, উল্লা গ্রামের বিপ্লব ও লিটন, বিত্তিপাড়া গ্রামের সুমন, তালিয়ান গ্রামের হারুন ও মাসুদ বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অংশ নেয়। এই সন্ত্রাসীরা এরআগে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিল। ৫ আগস্টের পর তারা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে কাজ করছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বুধবার সকালে জানান, ইউনুস আলী নামে এক বিএনপি কর্মী মারা গেছে বলে শুনেছি। এ ঘটনায় ৫৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সোনাবাহিনী কাজ করছে।

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) সংবাদাদাতা জানান, মহব্বত আলী ও ইউনুস আলীর হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে উপজেলা বিএনপি । বুধবার বিকেলে উপজেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহর ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।

মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ , সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম রবি, যুবদলের সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান মিলন, ছাত্রদলের সাবেক নেতা আশরাফুজ্জামান লাল প্রমুখ।

বক্তারা মহব্বত আলী ও ইউনুস আলীর হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।