শাসকগণ ৫৩ বছরে জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে

যশোরে চরমোনাই পীর রেজাউল করীম

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের শাসকগণ দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তার মতে, অতীতের সব সরকারের শাসনামলে একাধিকবার বাংলাদেশ পৃথিবীর কাছে দুর্নীতির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই এখন দেশের সামনে একমাত্র বিকল্প হিসেবে ইসলামী সরকারের প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে ইসলামী আন্দোলনকে গুরুত্ব দিয়ে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, আগামী নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন আর কোনো ধোঁকায় পড়বে না এবং নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে জনগণের পাশে থাকবে।

শুক্রবার বিকেলে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যশোর জেলা শাখা আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ রেজাউল করীম এসব কথা বলেন। সভায় তিনি ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদ, ছাত্রদের গণবিপ্লবে হত্যাকাণ্ডের বিচার, দুর্নীতিবাজদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা এবং গণকল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি করেন।

তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের প্রতিটি সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা প্রথম লংমার্চ করেছি। সর্বশেষ যখন ছাত্ররা রাজপথে আন্দোলন করছিল, তখন আমরা সাহস নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম এবং সরকারকে পালাতে বাধ্য করেছি।

সৈয়দ রেজাউল করীম আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের অতীতে বিভিন্ন সময়ে ভুল বুঝিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে, কিন্তু এবার তা হতে দেওয়া হবে না।

তিনি উল্লেখ করেন, এবার দেশের জনগণ বুঝে গেছে যে, ইসলামী আন্দোলন ছাড়া কোনো দলই আগামী নির্বাচনে সরকার গঠন করতে পারবে না। এজন্যে তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ইসলাম নামক নীতি-আদর্শ যতক্ষণ বাংলার মাটিতে শক্তিশালী না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই জাতির কল্যাণ আসতে পারে না, আমরা কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের ক্ষমতার সিঁড়ি হিসে ব্যবহৃত হবো না।

সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, ফ্যাসিস্ট, বিদেশের তাবেদার, এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী, ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা ৫ আগস্ট বিতাড়িত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা ন্যায্য দাবি আদায়ে রাস্তায় নামায় তাদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একমাত্র রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সেই সময়ে ঘোষণা দিয়ে সংগ্রামে নেমেছিল।

জনসভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির হজরত মাওলানা হাফেজ আব্দুল আউয়াল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মাওলানা মো. শোয়াইব হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ফারুক আহমাদ, ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অ্যাডভোকেট নূর ইসলাম নুরুল, যশোর জেলা শাখার সাবেক আমির অধ্যক্ষ নাজমুল হুদা ও ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট বায়েজিদ হুসাইন প্রমুখ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জনসমাবেশ শেষে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।