আকরামুজ্জামান॥ পবিত্র ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে যশোর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে যে যার মতো তার গন্তব্যে যাচ্ছেন। মূলত তারা ফিরছেন বাড়ি থেকে কর্মস্থলে । তবে অতীতের মতো তাদেরকে কোনো ঝক্কিঝামেলায় পড়তে হচ্ছে না।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে যশোর রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন পরিবহন কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে যাত্রীদের ব্যস্ততা। একদিকে দীর্ঘ ভ্রমণের প্রশান্তি নিয়ে ঢাকামুখী ট্রেন ও বাসে উঠছেন তারা, অন্যদিকে টিকিট হাতে উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছেন অন্য পথের যাত্রীরা। প্ল্যাটফর্মে শিশুদের হাসি, ব্যস্ত ঠেলাগাড়ি আর যাত্রীদের গুঞ্জনে মুখর ছিল ট্রেন ও বাস স্টেশনগুলো। যশোর রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, এদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৪ ট্রি ট্রেন আসা -যাওয়া করেছে ঢাকা থেকে।

বিকেলে যশোর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকামুখী যাত্রীদের সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রেলস্টেশনে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মগুলোতে যাত্রীদের ভিড়। আগত ট্রেনগুলো থেকে যাত্রীরা নামছেন এবং অপেক্ষমাণ যাত্রীরা নিজ গন্তব্যের ট্রেনে উঠছেন।

যশোর স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান জানান, অন্যান্য দিনের মতো সবগুলো ট্রেন চলাচল করছে। এখন পর্যন্ত ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়েই গন্তব্যে পৌঁছেছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে সব ট্রেন সময়মতো পরিচালনা করা হচ্ছে। ঈদের চাপ সামলাতে বাড়তি স্টাফ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বাড়ানো হয় বলে তিনি দাবি করেন।

স্টেশনে কথা হয় জহুরুল ইসলাম নামে এক যাত্রীর সাথে। রাজধানীর মতিঝিলে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মচারী তিনি। স্ত্রী- সন্তানকে নিয়ে তিনি ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছেন। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার নির্বিঘ্নে যেতে পারছেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আসার দিনও কোনো সমস্যা হয়নি। ফলে আশা করছি আজও কোনো সমস্যা হবেনা।

একই কথা বলেন, জেসমিন আকতার নামে আরেক যাত্রী। তিনি বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার ট্রেনে বাড়ি যাওয়া ও ফেরা দুটোই স্বস্তির। আসার দিন ট্রেনে কোনো বাড়তি যাত্রী ছিল না, পাশাপাশি সময় মত ট্রেন এসে পৌঁছে। এই স্বস্তির জার্নির পাশাপাশি পরিবারের সাথে ঈদ করে খুব ভালো লেগেছে। আজ আবার স্বস্তি নিয়েই ঢাকায় ফিরছেন বলে তিনি জানান।

একই অবস্থা ছিলো শহরের বাসস্ট্যান্ডগুলো। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলেন, ঈদের পরদিন থেকেই তারা পুরোদমে বাস সার্ভিস শুরু করেছে। তবে ৩ এপ্রিল থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। এসব দিক বিবেচনায় বাসের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে বলে তারা জানান।

এ প্রসঙ্গে যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়ন-২৭-র সহসভাপতি আবু হাসান জানান, নিকট অতীত যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক হয়েছে। ছুটি শেষে এখন মানুষ শান্তিতে গন্তব্যে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যাত্রীদের সুবিধার্তে পর্যাপ্ত গাড়ির সংখ্যা বাড়িয়েছে প্রত্যেক কোম্পানি। তারা সরকার নির্ধারিত ভাড়া নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, অন্যান্য বছর যে ভোগান্তি হতো এবার সে অবস্থা নেই। সবাই সময়মতো গাড়ি পাচ্ছেন। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।