দেশের একমাত্র মহিষ প্রজণন খামারের করুণ অবস্থা

0

ফকিরহাট (বাগেরহাট)সংবাদদাতা॥ বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাংলাদেশের একমাত্র মহিষ প্রজণন ও উন্নয়ন খামারটি দীর্ঘদিন ধরে লোকবল সংকটে ভুগছে। মাত্র ১০ শতাংশ (মহিষ এটেন্ডেন্ট) জনবল দিয়ে খামারের প্রায় ৫০০ মহিষের খাবার ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচর্যা চলছে। এই সংকটের কারণে মহিষ রুগ্ন হচ্ছে। বেড়েছে মৃত্যুর ঘটনাও। এতে দুগ্ধ ও মাংস উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

ফকিরহাট উপজেলার পিলজংগ এলাকায় ৯৫ একর জমির ওপর ১৯৮৪-৮৫ সালে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে খামারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে ১১১টি মহিষ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪২৫টি মহিষ রয়েছে। খামার পরিচালনার জন্যে মোট ৫২টি পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র ১৩ জন কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় শ্রেণির ১৪টি পদের বিপরীতে মাত্র ৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দাপ্তরিক কাজ সামলাচ্ছেন। এদের মধ্যে আবার কয়েকজন শিগগিরই অবসরে যাবেন।

এ ছাড়া মহিষের সরাসরি পরিচর্যার জন্যে ৩৮টি চতুর্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে মাত্র ৪ জন কর্মী কাজ করছেন। এদের মধ্যে ২ জন সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকায় মাত্র ২ জন মহিষ এটেনডেন্ট বিশাল খামারের সব কাজ পরিচালনা করছেন। ফলে দৈনিক ৫-৬ হাজার কেজি ঘাস কাটা, দানাদার খাদ্য প্রস্তুত, খড় কাটাসহ অন্যান্য কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিছুদিন আগে খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এই খামারের অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের ২০টি মহিষ মারা যায়। এভাবে চলতে থাকলে খামারটি অচল হয়ে পড়তে পারে।

মহিষ খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক শেখ আল মামুন জানান, বর্তমানে ২০৩টি গাভী, ২১২টি বাছুর ও ১০টি ষাঁড় রয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য থাকলেও কর্মী সংকটের কারণে তা সঠিকভাবে পরিবেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই বৃহৎ খামার পরিচালনার জন্যে চতুর্থ শ্রেণির অন্তত ৯০ জন মহিষ এটেনডেন্ট কর্মী প্রয়োজন। অথচ আছে ৪ জন।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, মহিষ খামারে প্রকল্প শেষ হওয়ায় জনবল সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শূন্য পদে নিয়োগ দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। আমরা আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগের চেষ্টা করছি।