চুয়াডাঙ্গায় কীটনাশকে শিয়াল, কুকুর, গন্ধগোকুল ও বেজি হত্যা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় কীটনাশক প্রয়োগে সাতটি শিয়াল ও একটি করে কুকুর, গন্ধগোকুল ও বেজি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

রোববার রাতে বন্য প্রাণী বিভাগের খুলনা কার্যালয়ের ফরেস্ট গার্ড মো. রাসেল মিয়া বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় এই জিডি করেন। এর আগে বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্যসহ এটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

জিডিতে সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের দীননাথপুর গ্রামের মো. নবীছদ্দিনের ছেলে কৃষক মো. ফারুক হোসেনের (৩৫) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে অভিযুক্ত ফারুক হোসেন আত্মগোপনে চলে গেছেন।

পরিবেশবিদ ও বিদ্যালয়শিক্ষক চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছি গ্রামের বাসিন্দা বখতিয়ার হামিদ গতকাল গণমাধ্যমে বলেন, শুক্রবার সকালে মো. ফারুক হোসেন তার ভুট্টাখেত বিনষ্টের আশঙ্কায় সেখানে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে রেখে আসেন। এ খাবার খেয়ে পরবর্তী সময়ে একে একে একটি গৃহপালিত কুকুর, সাতটি শিয়াল, একটি গন্ধগোকুল ও একটি বেজি মারা যায়। গতকাল বখতিয়ার বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা বন বিভাগের কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলামকে জানালে তিনি বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনা কার্যালয়কে জানান।

বখতিয়ার হামিদ বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব কুকুর ও এতগুলো বন্য প্রাণী হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। খেতের পাশে প্রাণীগুলোর মরদেহ দেখতে পেয়ে খুবই কষ্ট পেয়েছি। এতগুলো প্রাণী নির্বিচারে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীও সোচ্চার হয়েছেন। তাঁরাও অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেছেন।’
খবর পেয়ে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনা কার্যালয়ের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্যসহ একটি প্রতিনিধিদল গতকাল সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। তারা ঘটনার সত্যতা পান। এরপর রাত সাড়ে নয়টায় একই কার্যালয়ের ফরেস্ট গার্ড মো. রাসেল মিয়া বাদী হয়ে সদর থানায় একটি জিডি করেন।

বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে প্রাণীগুলোকে বিষ প্রয়োগে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অভিযুক্ত ফারুক হোসেন আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি বলে গতকাল জাতীয় একটি সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদুর রহমান ওই গণমাধ্যমে বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য উপপরিদর্শক (এসআই) নিবাস কুন্ডুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।