খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে সব থানার ওসিকে অপসারণ দাবি বিএনপির

0

খুলনা ব্যুরো ॥ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে মহানগরীর সব থানার ওসিকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়েছে খুলনা বিএনপি। বিশেষ করে খুলনা সদর থানার ওসি মুনীর উল গিয়াসকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। অন্যথায় খুলনা জেলা প্রশাসক ও মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দফতর ঘেরাও কর্মসূচিসহ খুলনা অচল করে দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা মহানগরীর কেডি ঘোষ রোডে বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি, ৩০নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আমির হোসেন বোয়িং মোল্লা ও ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ সভাপতি মানিক হাওলাদার হত্যাকা-, ২৭নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহিন ও ছাত্রদল কর্মী নওফেলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মহানগর ও জেলা বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
এ সময় বক্তারা বলেন, গত পাঁচ মাসে পুলিশ প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় খুলনার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। একের পর এক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। বিএনপির দুইজনসহ গত ৪ মাসে মহানগরীতে ১০টি হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন অপরাধীদের গ্রেফতারে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এছাড়া মাদক ব্যবসা বন্ধ, বিভিন্ন মামলার আসামিদের গ্রেফতর, খুন, জখম, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেলেও পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার করছে না। পুলিশের সাথে সখ্যতা করে অপরাধীরা নগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। যাতে করে নগরবাসী চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থেকে শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ কর্মকর্তাদের দায়িত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে মহানগরীর আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা আরও বলেন, খুলনার অলিতে-গলিতে মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে কিন্তু পুলিশ এ অপরাধ দমনে কার্যত কোনো ভূমিকা রাখছে না। ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আমিন মোল্লা বোয়িং, ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি মানিক হাওলাদারকে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু হত্যাকারীরা ধরা পড়েনি। মানিক নিহত হওয়ার আগে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়ার পর পুলিশ মামলা নেয়। পরবর্তীতে একজনকে আটক করা হলেও অজ্ঞাত কারণে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই সন্ত্রাসীকে ছেড়ে দেওয়া না হলে আজ মানিক হত্যাকা- ঘটতো না।
বক্তারা বলেন, পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার না করে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের সাথে গোপন বৈঠক করছে। বিএনপি অফিস ভাঙচুর মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। নগরীর রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকরা চরম নিরাপত্তায় রয়েছেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, স. ম আব্দুর রহমান, অ্যাড. নুরুল হাসান রুবা, খান জুলফিকার আলী জুলু, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, তৈয়েবুর রহমান, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু পিসি রায় রোড, যশোর রোড, ফেরিঘাট ঘুরে স্যার ইকবাল রোড হয়ে দলীয় কার্যালয় গিয়ে শেষ হয়। এসময় পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতা ও অপসারণ নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।