১৫ বছর উলাশীর আতঙ্ক ছিলেন মিলন মেম্বার

0

তরিকুল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর)॥ বাহিনী প্রধান মিলন মেম্বারের অত্যাচার -নির্যাতনের ভয়ে ১৫বছর ধরে উলাশী বাজারে যেতে পারেননি ঝিকরগাছার মির্জাপুর, খড়ুষা, নির্বাসখোলাসহ কয়েক গ্রামের বিএনপি সমর্থিত নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। ঝিকরগাছার এসব গ্রামের মানুষের জমি লিজের নামে জোর করে দখলে নিয়ে পার্ক নির্মাণ করলেও কখনো লিজের টাকা দেওয়া হয়নি। মিলন মেম্বারসহ উলাশী গ্রামের গোলাম, মির্জাপুর গ্রামের নাপিত কবির, শিমুল, সেলিম, শাওন, বাবলুদের অত্যাচার -নির্যাতনের ভয়ে মুখ খুলতে সে সময় সাহস করেনি কেউ । পরে মির্জাপুর এগ্রো ফার্ম লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ও গোলাপ রহমান হাফিজিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিনের প্রচেষ্টা ও গ্রামবাসীর সহযোগিতায় শার্শার উলাশী গ্রামের বাসিন্দা বহু অপকর্মের হোতা সাবেক মেম্বার তরিকুল ইসলাম মিলনের ঝিকরগাছার মির্জাপুর, খড়ুষা, নির্বাসখোলা ও শার্শার উলাশী এলাকায় গড়ে ওঠা সেই পার্ক থেকে জমি উদ্ধার করে গ্রামবাসী। তখন নির্যাতনের শিকার হতে হয় গ্রামবাসীকে। ওই সময় মিলন মেম্বার পার্কে বোমা তৈরি করতেন। এছাড়া অবৈধ নারী ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম চলতো ওই পার্কে। বোমা তৈরি করতে গিয়ে সে সময় ৩জন কারিগর নিহত হন। নিহত সেই তিনজনের লাশ বিচালি দিয়ে মুড়ে নদীতে ফেলে দেন মিলন মেম্বার। পরে পুলিশ বোমার কারিগরদের খন্ড-বিখন্ড লাশ উদ্ধার করে। সেই ঘটনায় মামলা হলেও টাকা ও ক্ষমতার জোরে অপরাধীরা ছিল ধরা -ছোঁয়ার বাইরে ছিল। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে বহু অপকর্মের হোতা মিলন মেম্বার গা ঢাকা দেন। ইতোমধ্যে তার অত্যাচার -নির্যাতনের শিকার হওয়া পরিবারগুলো মুখ খুলতে শুরু করেছেন। গত ইউপি নির্বাচনে বাহিনী প্রধান মিলন মেম্বারের পক্ষে কাজ না করায় নির্বাচনের পরদিন ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর সকালে উলাশী বাজারের ব্যবসায়ী মতলেব আলীর কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে কুপিয়ে জখমসহ তার কাঁচামালের আড়ৎ ভাঙচুর করা হয়। ওই ঘটনায় তখন তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি তিনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সম্প্রতি মতলেব আলী উলাশীর মেম্বার তরিকুল ইসলাম মিলনসহ উলাশী এলাকার সন্ত্রাসী জালাল, আব্দুল আলীম, মঈন, সোহেল, আশিক, রাজু ও টুটুলের নামে মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন।
মির্জাপুর গ্রামের জাকির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, বাহিনী প্রধান মিলন মেম্বারের অবৈধ কার্যক্রমের বিরোধিতা করার কারণে ঝিকরগাছা উপজেলার মির্জাপুর, খড়ুষা, নির্বাসখোলা, রঘুনাথপুরবাগসহ শার্শা উপজেলার ৭/৮টি গ্রামের মানুষ উলাশী বাজারে উঠতে পারেননি। যে তার বিপক্ষে গেছে তাকে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।