যশোরে যুবক খুন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে আসাদুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকালে শহরতলীর খোলাডাঙ্গাস্থ ব্র্যাক অফিসের বিপরীত থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা পৌনে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কিন্তু কী কারণে কারা তাকে জখম করেছিলো তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে আসাদুল ইসলাম পেশাদার চোর হিসেবে পরিচত ছিলেন বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জানতে পেরেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ধারণা করছে, হয়ত চুরি সংক্রান্ত কোনো ঘটনায় পিটুনিতে আহত হয়েছিলেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত আসাদুল ইসলাম শহরের খড়কি দক্ষিণ পাড়ার জহুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে শহরের নাজির শংকরপুরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই রেজোয়ান জানান, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে স্থানীয় মসজিদের মুসল্লীরা নামাজ শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে খোলাডাঙ্গাস্থ ব্র্যাক অফিসের বিপরীতের রকমারি কফি হাউজের সামনে এক যুবককে জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় সেলিম নামে এক ব্যক্তি তাকে খড়কি দক্ষিণ পাড়ার আসাদুল বলে চিনতে পারেন। পরে সেলিমসহ দুই ব্যক্তি গুরুতর জখম আসাদুলকে উদ্ধার করে প্রথমে খড়কি দক্ষিণপাড়ায় তার পিতার বাড়িতে নিয়ে যান। পরে স্বজনেরা তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা পৌনে ১২টার দিকে আসাদুল হাসপাতালে মারা যান। তিনি বলেন, আসাদুলের দুই পা থ্যাতলানো জখম ছিলো। কাঠ দিয়ে পেটালে যে ধরনের থ্যাতলানো জখম হয় সেই ধরনের জখম ছিলো। এছাড়া তার বাম হাতের বোগলের নিচে ধারালো অস্ত্রের জখম ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে, বোগলের নিচের জখমের স্থান থেকে রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও জানান, যারা আসাদুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জীবিত থাকা অবস্থায় তারা বারবার তার কাছে জানতে চেয়েছেন কারা তাকে মারধর করেছেন। কিন্তু ‘পরে বলব’ এই বলে কারো নাম প্রকাশ করেননি আসাদুল। এসআই রেজোয়ান জানান, নিহতের স্ত্রী ডলি তাকে জানিয়েছেন যে, গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আসাদুল বাসা থেকে বের হয়েছিলো। রাতে আর বাসায় ফেরেনি। পরদিন সকালে তিনি খবর পান তার স্বামী গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। স্বজনদের সাথে কথা বলেছেন। তারা তাকে জানিয়েছেন, আসাদুল ট্রাকের হেলপারসহ দিনমজুরের কাজ করতেন। তবে কারা তাকে জখম করেছিলো তা স্বজনেরা বলতে পারেননি।
নিহত আসাদুলের ভাই কুরবান জানান, তার ভাই ট্রাকের হেলাপারের কাজ ছাড়াও দিনমজুরের কাজ করতেন। কারা তার ভাইকে মেরেছে তা তিনি জানেন না।
এদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, আসাদুল পেশায় চোর ছিলেন। পিতামাতার অমতে বিয়ে করে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে নাজির শংকরপুরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সপ্তাহ খানেক আগে অন্যত্র চুরি করতে গিয়ে পিটুনিতে আহত হয়েছিলেন আসাদুল। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার ভোরে হয়ত কোথাও চুরি করতে গিয়ে পিটুনিতে জখম হয়েছিলেন আসাদুল। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।