ঝাঁপায় ডিলারের বাড়ি থেকে ৩১২ বস্তা খাদ্যবান্ধব চাল উদ্ধার

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা গ্রামে ডিলার আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনুর বাড়ি থেকে ৩১২ বস্তা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল উদ্ধার করেছেন কার্ডধারী সুবিধাভোগীরা। স্থানীয়দের সহায়তায় সুবিধাভোগীরা চাল উদ্ধারের পর সেটি ঝাঁপা বাজারের ওই ডিলারের ভাড়া করা গুদামে নিয়ে রাখেন। পরে উপজেলা খাদ্য অফিসের কর্মকর্তা, ডিলার এবং এলাকার গণমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিক্রয় করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঝাঁপা গ্রামের চাকলাবেড়ের প্রয়াত রজব আলীর পুত্র এবং আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনু ঝাঁপা বাজারের গুদাম ভাড়া নিয়ে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সময়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়ে চালের ব্যবসা করে আসছেন। প্রতিমাসে তিনি নিয়মিত ওই বাজারে কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিক্রি করেন।
গত সোমবার চাল উত্তোলনের পর তিনি অতি গোপনে তার নিজ বাড়ি এবং প্রতিবেশী কামরুল ইসলামের বাড়িতে রাখেন। কার্ডধারীরা সেটি জানতে পেরে মনিরুজ্জামানের বাড়িতে অবস্থান নেন। প্রথমে ডিলার মনিরুজ্জামান মনু চাল উত্তোলনের কথা অস্বীকার করেন। এরপর জনরোষ এড়াতে তিনি চাল উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। এরপর সুবিধাভোগী এবং স্থানীয়রা মিলে চাল উদ্ধার করে ডিলারের ঝাঁপা বাজারের গুদামে নিয়ে রাখেন। সেখান থেকে কার্ডধারীদের মাঝে সেই চাল বিক্রি করা হয়।
গোলাম মোস্তফা, আমিন গাজী, ইউনুস আলী, আমেনা বেগমসহ একাধিক কার্ডধারী সুবিধাভোগী জানান, প্রতিমাসে মনিরুজ্জামান মনুর ঝাঁপা বাজারে গুদাম থেকে চাল ক্রয় করি। কিন্তু এবার মনু চাল উত্তোলন করে আমাদের কাছে বিক্রি না করে তার বাড়িতে নিয়ে রাখেন। পরে আমরা সুবিধাভোগীরা তার বাড়িতে অবস্থান নিলে তিনি চাল উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। পরে আমাদের চাপে তার বাড়ি থেকে চাল বাজারে পাঠাতে দিতে বাধ্য হন।
এ বিষয় ঝাঁপা গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, মনিরুজ্জামান মনু ঝাঁপা বাজারে নিয়মিত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রি করেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও তিনি চাল বিক্রয় করেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি চাল উত্তোলন করে নিজের বাড়িতে রাখেন। এ ঘটনা জানার পর কার্ডধারীরা তার বাড়িতে অবস্থান নিলে জনরোষ এড়াতে মনিরুজ্জামান মনু চাল বাজারে পাঠিয়ে দেন। সেখানে কার্ডধারীদের মাঝে ডিলারের উপস্থিতিতে সঠিকভাবে বিক্রয় করা হয়। আমরা এলাকাবাসী এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহায়তা করি।
মনিরামপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে ডিলার মনিরুজ্জামান মনু হয়তো তার বাড়িতে চাল রাখছিলেন। সেখান থেকে তিনি হয়তো কার্ডধারীদের মাঝে বিক্রয় করতে চেয়েছিলেন। তার আগেই সুবিধাভোগী স্থানীয়রা সেই চাল ডিলারের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ঝাঁপা বাজারের ডিলারে গুদামে নিয়ে রাখেন। সেখান থেকে ডিলারের উপস্থিতিতে এবং আমার অফিসের একজন ইনস্পেক্টরের তদারকিতে বুধবার এবং বৃহস্পতিবার কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিক্রয় করা হয়। এ ব্যাপারে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী এবং বাজারের গণ্যমান্যরা ব্যক্তিরা সর্বাত্মক সহায়তা করেন। একটি চালও তছরুপ হয়নি। প্রকৃত কার্ডধারীই চাল পেয়েছেন। তবে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও খাদ্যবান্ধক কর্মসূচির ডিলার মনিরুজ্জামান মনু কোনো কথা বলতে চাননি।