যশোরে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার মুক্তিযোদ্ধা খয়রাতের

এক দশক পর আ.লীগ নেতা খয়রাতের বোধদ্বয় ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বিরুদ্ধে মামলাটি করা ছিলো ভুল’

0

মীর মঈন হোসেন মুসা ॥ এক দশক আগে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করেছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক(বর্তমান সহ সভাপতি) বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম খয়রাত হোসেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে তিনি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলেন। বুধবার তিনি আদালতে আবেদন জানিয়ে সেই মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আরেকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বিরুদ্ধে মামলাটি করা ছিলো ভুল এবং সেই ভুল বুঝতে পেরে মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম খয়রাত হোসেন।
বাদীর আইনজীবী মাহাবুর সরকার লাল্টু জানান, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম কিবরিয়া আবেদনটি মঞ্জুর করায় মামলাটি প্রত্যাহার হয়ে গেছে। তিনি বলেন, তার মক্কেল এ কে এম খয়রাত হোসেনকে কেউ কোনো চাপ সৃষ্টি করেনি । তিনি অসুস্থ হওয়ায় নিজ ইচ্ছায় মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম খয়রাত হোসেন জানান, ‘১০ বছর আগে যখন তিনি মামলাটি করেছিলাম তখন শক্তি সামর্থ্য ছিলো। আবেগের বশে মামলা করেছিলাম। এই ১০ বছরের মামলার বিচারিক কাজ শেষ হয়নি। তাছাড়া তাকে ধার্য্যদিনে আদালতে ২/৩ ঘন্টা ধরে বসে থাকতো হয়। এখন শারীরিকভাবে আমি খুবই অসুস্থ। আদালতে হাজিরা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আরেকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করা ভুল বিষয়টি বুঝতে পেরে নিজ ইচ্ছায় মামলা প্রত্যহার করে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন খয়রাত। এ জন্য কেউ তাকে চাপ সৃষ্টি করেনি। এক পর্যায়ে এ কে এক খয়রাত হোসেন দাবি করেন, তিনি আওয়ামী লীগ করেন না।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর যশোর শহরের আর এন রোডের বাসিন্দা এ কে এম খয়রাত হোসেন বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আমলী আদালতে মানহানি মামলাটি করেছিলেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেছিলেন, আসামি তারেক রহমান ইংলান্ডে বসবাস করছেন। ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের ইস্ট লন্ডনের অ্যাট্রিয়াম ব্যাংকোয়েট হলে আয়োজিত বিএনপি’র আলোচনা সভায় আসামি তারেক রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে শেখ মুজিবই বড় রাজাকার ‘পাকবন্ধু’ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ‘মোনাফেকের দল’ মর্মে মন্তব্য করে বক্তব্য প্রদান করেন। যা কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বাদী এ কে এম খয়রাত হোসেন এবং মামলার সাক্ষি সকলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুপ্রাণিত হওয়ায় তাঁর (তারেক রহমান) মন্তব্যে তাদের মানহানি/সম্মানহানি ঘটেছে। এ কারণে আদালতে মামলা করেছেন।
উল্লেখ্য, ওই মামলায় ৫ জনকে সাক্ষি করা হয়েছিলো। তারা হলেন, যশোর শহরের এম এম আলী রোডের মৃত তাজুল হক পাটোয়ারীর ছেলে আব্দুল খালেক, গোহাটা রোডের মৃত তফসির উদ্দীন আহমেদের ছেলে আসাদুজ্জামান, নতুন খয়েরতলা পালবাড়ি এলাকার মীর জহুরুল ইসলাম ও রেজাউল ইসলাম এবং শার্শা উপজেলার নাভারন রেল বাজার এলাকার মৃত মোমিন উদ্দীন সরদারের ছেলে এস এম আসিফুদ্দৌলা আব্দার অলোক। তারা সকলেই আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা।