যশোরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ডাবলুর অবৈধ স্থাপনা, পৌরসভার নোটিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পৌরসভার জায়গা দখল করে বাড়ি বানিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছেন যশোর সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মফিজুর রহমান ডাবলু। আওয়ামী জামানার প্রভাব প্রতিপত্তি দেখিয়ে চলেছেন এই নেতা। পৌরসভার নোটিশ অমান্য করে আছেন বহাল তবিয়াতে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ২৪ ঘণ্টার উচ্ছেদ নোটিশ প্রদানের এক মাস পার হলেও কিছুই হয়নি। বরং অবৈধ জমিতে থাকতে আদালতকে ব্যবহারের অপচেষ্টা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরসভার জায়গা দখল করে গড়ে তোলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয় মোট চারবার নোটিশ প্রদান করে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পৌরসভার অপসারিত মেয়র হায়দার গনি খান পলাশকে ম্যানেজ করে তিনি অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
যশোর শহরের হযরত বোরহান শাহ সড়কের ওয়াবদা মোড়ে পৌরসভার খালি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ে তোলেন মফিজুর রহমান।

যশোর পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, মফিজুর রহমান ডাবলুর বাড়ির নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য চলতি বছরের মে মাসের ৮ তারিখে নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু মফিজুর রহমান ডাবলু নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে কলাম নির্মাণ ও পুরাতন ভবনের সাথে সংযুক্ত করে এবং রাস্তার দিকে আরও বর্ধিত করে ছাদ ঢালাই কাজ সম্পন্ন করেন। সর্বশেষ ২৫ জুন পৌর কর্তৃপক্ষ মফিজুর রহমান ডাবলুকে পুনরায় নোটিশ দেয়।

নোটিশে তার বসতবাড়ির পূর্ব পাশের রাস্তার জায়গায় নির্মিত সেমিপাকা দোকান ঘর এবং উত্তর পাশে বর্তমানে নির্মাণাধীন পাকা ভবনসহ পৌরসভার অনুমোদনহীন ও নকশাবিহীন তার সকল স্থাপনা ভেঙে অপসারণ করে পৌর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য বলা হয় এবং তাকে জানানো হয় নির্দেশ অমান্য করলে কোনপ্রকার নোটিশ প্রদান ব্যতিরেকে পৌরসভার পক্ষ থেকে ওই স্থাপনা ভেঙে অপসারণ করা হবে। কিন্ত সাবেক পৌরসভার মেয়র হায়দার গনি খান পলাশকে ম্যানেজ করে সেই নোটিশও অম্যান্য করে তিনি স্থাপনা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন।

এরপর যশোর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসান প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়ার পর গেল ১ সেপ্টম্বর তিনি মফিজুর রহমান ডাবলুকে অবৈধ স্থাপনা বিষয় নিয়ে পুনরায় নোটিশ প্রদান করেন। সেখানে বলা হয় ‘সরকারি সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য কেন আপনার (মফিজুর রহমান ডাবলু) বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না, নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার সন্তোষজনক জবাব পৌর দপ্তরে দাখিলের জন্য বলা হলো।

অত্র নির্দেশ অমান্য করলে পরর্বর্তীতে কোন প্রকার নোটিশ ব্যতিরেকে পৌরসভার পক্ষ থেকে আপনার নির্মিত সকল অবৈধ স্থাপনা ভেঙে অপসারণ করা হবে। যারা যাবতীয় খরচ উন্নয়ন কর হিসেবে আপনার নিকট থেকে উসুল করা সহ আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ তবে নোটিশ প্রাপ্তির এক মাস অতিবাহিত হলেও মফিজুর রহমান তার অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেননি।

এ বিষয় বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদক পৌরসভার প্রশাসক রফিকুল হাসানের দপ্তরে যান। তিনি দাপ্তরিক কাজে বাইরে থাকায় মোবাইলের মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলীর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। প্রধান প্রকৌশলী শরীফ হাসান বলেন, মফিজুর রহমান পৌর কর্তৃপক্ষের নোটিশের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। আমরা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিয়েছি। এখন আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।’

এদিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মফিজুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি