ঝিকরগাছায় বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির আশংকা

0

তরিকুল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর)॥ ঝিকরগাছাতে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন নি¤œআয়ের মানুষ। পৌর এলাকাসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে আমন, পাকা আউশ ধান, কলা, পেঁপেসহ সব ধরনের সবজি ও মাছের বড় রকমের ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলে অসংখ্য পুকুর ভেসে গিয়ে মাছ চাষিদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর, পদ্মপুকুর ও পৌরসদরের ৫নং ওয়ার্ডে কৃর্তিপুর গিয়ে দেখা গেছে, এলাকার বেশ কয়েকটি পুকুর ভেসে গেছে। শফিকুল নামের এক মাছ চাষির কয়েক লাখ টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। এছাড়া ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মল্লিকপুর গ্রামের আব্দুল করিম, রেজাউল, জহুরুল ও অনুভবের পুকুর, পদ্মপুকুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুকুর।
পদ্মপুকুর গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, তার পুকুর ভেসে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এদিকে কয়েকদিনে অতিবর্ষণে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা। রোববার ঝিকরগাছায় হাট থাকায় এদিন বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনমজুর, ভ্যানচালক, ইজিবাইক, থ্রিহুইলার ও নিজেদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে কৃষকসহ নিম্নআয়ের মানুষদের বাজারে আসতে দেখা গেছে। বিকেলে বৃষ্টির তীব্রতা বেড়ে গেলে অধিকাংশ ভ্যান-রিকশা চালক বাড়ি চলে যান। তবে নিজেদের উৎবাদিত সবজি নিয়ে বাজারে এসে বিপাকে পড়েন কৃষকরা। এদিন বাজারে মানুষ কম থাকায় বিক্রি কম হয়েছে। ঝিকরগাছা বাসস্ট্যান্ড, উপজেলা মোড়, থানা মোড়, রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ঘুরে অধিকাংশ স্থানে মানুষের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে।
কৃষকেরা প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার হাটের দিন নিজেদের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে এসে খোলা জায়গায় বসে বিক্রি করেন। রোববার দিনভর বৃষ্টিতে তারা খুব কষ্টে দিন পার করেছেন। ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের মোহিনীকাঠি গ্রামের কৃষক ইসমাইল সরদার (৭৫) ও পাাশের মনিরামপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের কৃষক আরশাদ আলী সরদার (৭০) বলেন, তারা নিজেদের উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার ঝিকরগাছায় হাটের দিন ঝিকরগাছা প্রেসক্লাব ও বাজারের কাউন্সিল রোডে খোলা স্থানে বিক্রি করে সংসার চালান। এদিনও তার এসেছিলেন বৃষ্টি উপেক্ষা করে। কিন্তু আশানুরূপ দাম মেলেনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, এ বছর আবাদকৃত জমির পরিমাণ আউশ ধান ২৮৪০ হেক্টর, রোপা আমন ১৮ হাজার ৪২৫ হেক্টর, পটল ২৯০ হেক্টর, বেগুন ১৫৫ হেক্টর, পেঁপে ১৩০ হেক্টর, কলা ১০০ হেক্টর, মরিচ ৭৫ হেক্টর, পেঁয়াজ (বীজতলা) ১.৮২ হেক্টর, পেঁয়াজ (আবাদ) ২.১০হেক্টর, ফুল ৬৩০ হেক্টর, অন্যান্য সবজি ৬৯০ হেক্টর। এর মধ্যে দুর্যোগে আউশ ধান ৩৫০ হেক্টর, রোপা আমন ২ হাজার ৮শ ৬৫ হেক্টর, পটল ৫৫ হেক্টর, বেগুন ৩৫ হেক্টর, পেঁপে ১৫ হেক্টর, কলা ১৫ হেক্টর, মরিচ ১২ হেক্টর, পেঁয়াজ (বীজতলা) ০.২৫ হেক্টর, পেঁয়াজ (আবাদ) ০.৪৫হেক্টর, ফুল ৯৫ হেক্টর, অন্যান্য সবজি ১২৫ হেক্টর ক্ষতির আশংকা রয়েছে।