খুলনায় সাবেক কমিশনার শফিক ও ওসি কামরুজ্জামানসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

0

খুলনা ব্যুরো॥ খুলনা সদর থানায় এক ছাত্রদল নেতাকে ঝুলিয়ে নির্যাতনের আলোচিত ঘটনার ১২ বছর পর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম কামরুজ্জামান ও কেএমপির তৎকালীন কমিশনার শফিকুর রহমানসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার নির্যাতিত খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদুল হক টিটো খুলনা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি নগরীর টুটপাড়া মেইন রোডের এস এম এমদাদুল হকের ছেলে। মামলায় বাদিপক্ষের আইনজীবী এসএম মাহফুজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- সাবেক এসআই মো. শাহ আলম, মো. জেলহাজ্ব উদ্দিন, তৎকালীন পুলিশের সোর্স কাসেম, জাহিদ, তারক, ইস্রাফিল, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) তৎকালীন কমিশনার শফিকুর রহমান ও তৎকালীন ডিসি (সাউথ)।
আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে আগামী ১৭ অক্টোরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে কেএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার শফিকুর রহমান ও ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে ওসি এস এম কামরুজ্জামানসহ আসামিরা মাথায় হেলমেট, হাতে লাঠি ও সরকারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মাহমুদুল হক টিটো ও ফেরদৌস রহমান মুন্নাকে জোরপূর্বক আটক করেন। তাদের হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ও চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে থানায় নিয়ে আসা হয়।
পরে মাহমুদুলকে হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় থানা অভ্যন্তরে ফ্যানের হুকের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের বেধড়ক মারধরে বাদি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কামরুজ্জামান তখন পুলিশ সদস্যদের বলেন, ‘শালার জ্ঞান ফেরা, আমাদের আরো কাজ বাকি আছে।’ তখন আসামি এসআই মো. জেলহাজ্ব উদ্দিন চোখে মুখে পানি দিয়ে তার জ্ঞান ফেরান। তিনি কোনভাবেই বসতে পারছিলেন না। আসামিরা তাকে বার বার লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এক পর্যায়ে তৎকালীন ওসি বাদির পেটে লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। বলে-‘ শালাকে ক্রসফায়ারের জন্যে গাড়িতে উঠা, সব জানতে পারবো।’ তখন বাদি মেঝেতে পড়ে থাকলে পুনরায় আসামিরা পেটাতে থাকে। এতে তার হাড় ভেঙে যায় ও জখম হয়ে জ্ঞান হারান। পুলিশ কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারের নির্দেশে পরে তাদের জেলহাজতে রাখা হয়। শুধু তাই নয়, ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল পুলিশ মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যার প্রধান আসামি বাদি ও ছাত্রদল নেতা ফেরদৌস রহমান মুন্না।
২০১২ সালের ২২ এপ্রিল হরতালের সময় গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদল নেতা এসএম মাহমুদুল হক টিটোকে চোখ বেঁধে ফ্যানের হুকের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্মম নির্যাতন করেন ওসি কামরুজ্জামান। এ ঘটনার সময় খুলনা সদর থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামানসহ কনস্টেবল আবু সুফিয়ান, কনস্টেবল মামুন আখতার ও ওসির গাড়িচালক সুধাংশুকে প্রত্যাহার করা হয়।