পাইকগাছার তালের চারার চাহিদা দিনদিন বাড়ছে

0

এইচ এম শফিউল ইসলাম, কপিলমুনি (খুলনা) ॥ খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় নার্সারিতে তালের চারা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তালের চারার চাহিদা বাড়ায় নার্সারিগুলোতে প্রচুর পরিমাণ চারা তৈরি করা হচ্ছে। পাইকগাছার সততা নার্সারিতে মৌসুমের শুরুতেই প্রায় ৮০ হাজার তালের চারা তৈরির পরিচর্যা চলছে। চলতি মৌসুমে মায়ের দোয়া নার্সারিতে প্রায় ৩২ হাজার চারা তৈরির প্রস্তুতি চলছে। তাল গাছ প্রকৃতির বন্ধু ও প্রাকৃতিক ভারসম্য রক্ষাকারী বৃক্ষ। তালগাছ পরিবেশবান্ধব ও বজ্রপাত থেকে রক্ষাকারী গাছ। তালগাছ ভূমির ক্ষয়রোধ ও পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই তালের চারা রোপণ করা হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে।
পাইকগাছা কৃষি কর্মকর্তা অসীম কুমার বলেন, মানব সন্তানের উপকারী বন্ধু তাল বৃক্ষ, বর্তমান সময়ে খুবই প্রয়োজন এ তাল গাছের। কপিলমুনির ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জানান,আমার এলাকায় প্রচুর নারকেল ও তাল বৃক্ষ রোপণ করেছি। এলাকা ঘুরলে পাইকগাছা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায় বলেন, প্রায় সব ধরনের মাটিতেই তাল ফসলের আবাদ করা যায়। তবে উঁচুজমিতে এবং ভারী মাটি এটা চাষের জন্য বেশি উপযোগী। এদেশে বাগান আকারে কোনো তাল ফসলের আবাদ নেই। তিনি আরও বলেন আগস্ট মাস থেকে তাল পাকতে শুরু করে এবং অক্টোবর মাস পর্যন্ত পাকা তাল পাওয়া যায়। ভালো তাল বীজ সংগ্রহ করে চারা তৈরি করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নির্বাচিত মাতৃবৃক্ষ হতে তালের বীজ সংগ্রহ করা উচিত।
পাইকগাছার নার্সারিগুলোতে তালের চারা তৈরির জন্য এ বছর দেড় লাখ তাল বীজ বপন করা হয়েছে। মাটির ২ ফুট উঁচু বেড তৈরি করে তালের বীজ বপন করা হয়। অংকুরিত বীজ মাটির নিচের দিকে বাড়তে থাকে। চলতি মৌসুমে মাটি খুঁড়ে বীজপত্র তুলে চটের তৈরি পলিব্যাগে রোপণ করে চারা তৈরির পরিচর্যা করা হচ্ছে।
সততা নার্সারির মালিক অশোক কুমার পাল জানান, তিনি বাণিজ্যিকভিত্তিতে তালের চারা উৎপদন করছেন। গত বছর দেড় লাখ তালবীজ থেকে ৮০ হাজার তালের অংকুরিত বীজ রোপনসহ আনুসঙ্গিক খরচ হয়েছে ৯ লাখ টাকা। এখনো চারা তৈরির পরিচর্যার কাজ চলছে। মায়ের দোয়া নার্সারির মালিক ইউছুপ গাজী জানান, প্রায় ৩২ হাজার চারা তৈরির প্রস্তুতি চলছে। ২৫ হাজার চারা টিকতে পারে, সব আঁটি থেকে চারা েের হয় না। চারা তৈরি করতে তার প্রায় ছয় লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। উৎপাদিত তালের চারার ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন। চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন নার্সারি, এনজিও ও সরকারি ভাবে তালের চারা ক্রয়ের জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তাছাড়া উৎপাদিত তালের চারা সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিক্রি করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।