স্লোগানে প্রকম্পিত যশোরের রাজপথ

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা-হত্যার প্রতিবাদে শনিবার বিক্ষোভে উত্তাল ছিলো যশোর। এদিন সকালে স্লোগানে স্লোগানে যশোরের রাজপথ প্রকম্পিত করে ছাত্র-জনতা। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে মিছিলে গণতন্ত্রকামী ছাত্র-জনতার পাশাপাশি যোগ দেন শত শত অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
এসময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র অভিভাবকরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিব না। দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত। এই রক্তের বন্যায়/ভেসে যাবে অন্যায়। আমার ভাই মরলো কেন? খুনি হাসিনা জবাব দে। ছাত্রদের বুকে গুলি কেন? খুনি হাসিনা জবাব দে। এক দুই তিন চার শেখ হাসিনা তুই গদি ছাড়! আপোস না সংগ্রাম/সংগ্রাম-সংগ্রাম। ডিকটেটরের দুই নয়ন উন্নয়ন উন্নয়ন। শেম, শেম হাসিনা। ছি! ছি! হাসিনা, লজ্জায় বাঁচি না’। ইত্যকার স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে যশোরের রাজপথ।
শনিবার বেলা ১১ টা থেকে যশোর শহরের পালবাড়ি মোড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ সমবেত হতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যে সড়কে হাজারো মানুষের ঢল নামে। তারা, ‘দাবি এক, দফা এক-শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে। মিছিল চলাকালে রাস্তার দুই ধারের সাধারণ মানুষ তাদের করতালি দিয়ে স্বাগত জানাতে থাকে।
এরপর বেলা ১২ টার দিকে যশোরে এই বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে এ বিক্ষোভে শত শত অভিভাবক, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দেন। পালবাড়ি মোড়ে জড়ো হয় যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরপর সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ধর্মতলা, খোলাডাঙ্গা হয়ে চাঁচড়া তিন রাস্তার মোড়ে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়।
মিছিল শুরুর আগে বৃষ্টি শুরু হলেও বন্ধ হয়নি শিক্ষার্থীদের অবস্থান। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যায় কয়েক সহ¯্রাধিক মানুষের মিছিল।
প্রচ- বৃষ্টি উপেক্ষা করে গণমিছিল অব্যাহত রাখে ছাত্ররা। বৃষ্টির মধ্যে মিছিল চলাকালে আশপাশের বাসা-বাড়ির মহিলাদের পলিথিন নিয়ে এসে ছাত্রদের হাতে দিয়ে সহযোগিতা করতে দেখা যায়। পলিথিনগুলো দিয়ে ছাত্ররা বৃষ্টিতে কেউ তাদের মাথা এবং কেউ মোবাইল ফোন রক্ষা করার চেষ্টা করেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্রীদের মিছিলে অংশ নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এরপর দুপুরে বিশাল এই গণজমায়েতে সংগঠকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাশেদ খান, ইমরান খান প্রমুখ। গণজমায়েতে ছাত্র নেতারা বলেন, আমাদের একটাই দাবি এ সরকারের পদত্যাগ। সারাদেশে নিরীহ নিরপরাধ নিরস্ত্র ছাত্রদের গণহত্যা করেছে সরকার। এখন গণজাগরণের ঢেউ থেকে সরকার আমাদের আন্দোলন দমনে নানা কৌশল নিচ্ছে। সমাবেশ থেকে সারাদেশে গণতন্ত্রকামী ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার দাবি করা হয়।