চৌগাছায় আমন ধান রোপণে ব্যস্ত কৃষক

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় অবশেষে দেখা মিলেছে শ্রাবণের সেই স্বস্তির বৃষ্টি। দুই দিনের বৃষ্টিপাতে মাঠে জমেছে পানি। সময় নষ্ট না করে উপজেলার প্রতিটি এলাকার কৃষক আমন রোপণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
ছয় ঋতুর মধ্যে আষাঢ়- শ্রাবণ হচ্ছে বর্ষকাল। কাগজে কলমে এটি সত্যি হলেও গত কয়েক বছর ধরে এই দুই মাসে মিলছে না কাংখিত বৃষ্টি। যার ফলে পরিবেশে এর বিরুপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি কৃষকরা পানির অভাবে রোপা আমনে চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। মৌসুম শেষ হওয়ার সময়ে তারা এক প্রকার বাধ্য হয়ে ভূগর্ভের পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। গত কয়েক বছরে একই ধারাবাহিকতা থাকায় বাড়তি খরচে কৃষককে আমন ধান রোপণ করতে হচ্ছে। চলতি মৌসুমেও একই পরিস্থিতি দেখা দেয় চৌগাছাতে। আষাঢ় মাস পার হয়েছে। চলছে শ্রাবণ। আকাশের পানির দিকে চেয়ে থেকে বৃষ্টির পানি না পেয়ে অনেকেই সেচের পানি দিয়ে রোপণ কাজ শুরু করেন। তবে শেষমেষ আকাশের বৃষ্টির দেখা মিলেছে। বুধবার বিকেল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার ভোর হতে আবারও শুরু হয় বৃষ্টি। দুই দিনের বৃষ্টিতে নিচু জমিতে থৈথৈ করছে পানি। কাংখিত পানি পেয়ে কৃষক কোনভাবেই আর দেরি করেননি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নেমে পড়েছেন মাঠে। যে যেমনভাবে পেরেছেন জমির প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিরঝির বৃষ্টির মধ্যে চৌগাছার বাকপাড়া, বিশ্বাসপাড়া, সিংহঝুলী, চাঁদপুরসহ বেশ কিছু গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, চাষিরা আমনের ক্ষেত প্রস্তুত করতে ব্যস্ত। এ সময় কথা হয় সিংহঝুলী গ্রামের কৃষক আলম দফাদার, কয়ারপাড়া গ্রামের ইউছুপ আলী, মো. হাবিবসহ একাধিক কৃষকের সাথে। তারা বলেন, আমন ধান রোপণ নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলান। ধান রোপণের মৌসুম প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু জমি ইতোমধ্যে সেচের পানি দিয়ে রোপণ কাজ শেষ করেছি। কিন্তু সেচের পানিতে ব্যয় বেশি হওয়ায় অপেক্ষায় ছিলাম আকাশের বৃষ্টির জন্যে। অবশেষে সেই বৃষ্টির দেখা মিলেছে। ফলে আর দেরি না করে সকাল থেকেই জমি প্রস্তুতি শুরু করেছি। তবে একসাথে চাষ লেগে যাওয়ায় কলের লাঙ্গল কিংবা গরু দিয়ে চাষ করা লাঙ্গল পেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। জমি প্রস্তুতি শেষ হলেই রোপণ কাজ শুরু করা হবে। কৃষক শাহিনুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ও জব্বার হোসেন বলেন, ইরি বোরো চাষে অনেক ঝুঁকি থাকে। আর ইরি ধানের বিচালি তৈরিতেও ঝুঁকি। ওই সময়ের বৃষ্টিতে ইরি ধানের বিচালি নষ্ট হয়ে যায়। সে কারণে আমন ধান রোপণে এ অঞ্চলের কৃষকরা বেশি আগ্রহী।
উপজেলা কৃষি অফিসার মুসাব্বির হোসাইন বলেন, চলতি রোপা আমন মৌসুমে চৌগাছাতে মোট ১৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃষ্টির অভাবে লক্ষমাত্রা নির্ধারণে কিছুটা শংকায় ছিলাম। শেষমেষ বৃষ্টির দেখা মিলেছে। আমি আশাবাদী এ বছর আমনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে।