মনিরামপুরে গোপনে কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার, মনিরামপুর (যশোর) ॥ মনিরামপুরে ডাঙ্গামহিষদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি নেই প্রায় নয় বছর। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক গোপনে তার ছোট ভাইকে সভাপতি করে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে শ্যালক বিল্লাল হোসেনকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার অবসরে যাওয়ার মাত্র সাতদিন আগে গত ২৭ জুলাই এ কথিত নিয়োগবোর্ড সম্পন্ন করেন। বিষয়টি জানাজানি হবার পর জনরোষ থেকে রক্ষা পেতে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান আত্মগোপনে রয়েছেন। এদিকে সোমবার এলাকাবাসী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গামহিষদিয়া-পাড়িয়ালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। এ কারণে ২০১৫ সালের পর থেকে নিয়মিত কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলা নিষ্পত্তির পর যশোর শিক্ষা বোর্ড ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ছয় মাসের জন্য একটি অ্যাডহক কমিটির অনুমোদন দেন। সেই কমিটির সভাপতি করা হয় প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের ছোট ভাই আনারুল ইসলামকে। কিন্তু এ কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও এলাকায় বিরোধ দেখা দেওয়ায় আর কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। ফলে প্রতিমাসে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিস্বাক্ষর নিয়ে ব্যাংক থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন উত্তোলন করে আসছেন। সর্বশেষ জুন মাসের বেতনশিটে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন প্রতিস্বাক্ষর করেন ১০ জুলাই তারিখে।
এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার চাকরি থেকে অবসরে যাবেন আগামী ৩ আগস্ট। অভিযোগ উঠেছে, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সহায়তায় প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জালিয়াতির মাধ্যমে তার ছোট ভাই আনারুল ইসলামকে সভাপতি করে কথিত নিয়মিত কমিটি গঠন করেন। এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারা কেউ এ বিষয়ে অবহিত নন। শিক্ষক প্রতিনিধি আকরাম হোসেন, প্রমিলা রায়, তাপসী বিশ^াস বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাদের নিয়ে কখনও মিটিং করেননি এমনকি কোনো রেজ্যুলেশনেও আমরা স্বাক্ষর করিনি।
পরবর্তিতে গত ২৭ জুলাই বিকেলে অতি গোপনে কথিত নিয়োগবোর্ড করে প্রধান শিক্ষকের চাচাত শ্যালক বিল্লাল হোসেনকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি দেওয়া হয়। আর এ বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায়। ফলে জনরোষ থেকে বাঁচতে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান আত্মগোপনে চলে যান।
তবে প্রধান শিক্ষক মোবাইল ফোনে জানান, এখনও কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অপরদিকে নিয়োগবোর্ডের কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার নিয়োগ দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত ২৮ মার্র্চ তারিখে যশোর বোর্ডের অনুমোদনকৃত নিয়মিত কমিটির একটি কপি প্রদর্শনের পর নিয়োগবোর্ড সম্পন্ন করা হয়। এতে কোনপ্রকার অনিয়ম করা হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পর নিয়োগবোর্ড স্থগিত করে প্রধান শিক্ষককে হাজির করতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।