অভয়নগরের মুজাদখালী নদীতে কুমির

0

স্টাফ রিপোর্টার,অভয়নগর (যশোর)॥ যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ভৈরব ত্রিমোহনীর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে মুজাদখালী নদী। এই এলাকার ৫ গ্রামে মানুষের মাঝে কুমির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কুমিরের আক্রমণের হাত থেকে প্রাণে বেঁচেছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধসহ ২ জন ব্যক্তি। এ কারণে মাছ ধরছেন না জেলেরা। এলাকার মানুষ নদীতে নামছেন না। এলাকায় ৪ থেকে ৬ টি কুমিরের বিচরণ দেখে অনেকেই নদীতে গোসল করেছেন।
উপজেলার মুজাদখালী নদী, ভৈরব নদের সংযুক্ত হয়ে খুলনার রুপসা ও শিপসা নদীর সাথে মিশেছে। তাই এ নদীতে কুমির আসাটা স্বাভাবিক। তবে বনের ভেতর থেকে নদী হয়ে লোকালয়েও চলে আসছে কুমির। ফলে কুমিরের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে আছেন এ অঞ্চলের জেলেসহ ৫ গ্রামের মানুষ। কুমিরের ভয়ে নদীতে নামা বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। অনেকেই খেয়েছেন কুমিরের তাড়া।
স্থানীয় জেলেরা জানান, বিভিন্ন নদ-নদীতে বড় বড় কুমির বিচরণ করছে। কুমিরের আক্রমণে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ভয়ে এলাকার লোকজন নদীতে নামছে না। মাছও ধরতে পারছেন না। এতে জেলে পরিবারগুলোতে শুরু হয়েছে দুর্দিন। স্থানীয় এলাকাবাসী পল্লব বিশ্বাস, সমীরণ বিশ্বাস, বিষ্ণুপদ বিশ্বাস জানান, বছরের এ সময়টায় শিবসা, হাপরখালী, ভদ্রাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে কুমিরের আনাগোনা বেড়ে যায়। সম্প্রতি উপজেলার জয়রাবাদ গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ বিশ্বাস(৭২) নদীতে গোছল করতে গিয়ে কুমিরের লেজের বাড়ি খেয়ে আহত হন। এছাড়া উপজেলার মুজাদখালী নদীতে খেয়া পারাপারে সময় কুমির লেজ দিয়ে বাড়ি মারে বিমল কান্তিকে। এ এলাকায় ৪ থেকে ৬টি কুমিরের বিচরণ দেখে অনেকেই নদীতে গোসল করেছেন। তারা আরও জানান,শনিবার বিকেলে উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের মুজাদখালী নদীর তীরবর্তী নলামারা গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৫৮) নদীতে মাছ ধরতে যান। হঠাৎ একটি কুমির তার সামনে ভেসে ওঠে। মাছ ধরা বাদ দিয়ে তিনি ভয়ে দৌড়ে বাড়ি চলে যান।
সুদিপ্ত কুমার বলেন, নদীতে মাছ ধরে কোনোমতে সংসার চালাই। কিন্তু প্রায়ই মুজাদখালী নদীতে কুমির ভাসছে। আবার ডাঙায়ও উঠে আসছে। ভয়ে নদীতে নামতে পারছি না।কুমিরের কথা শুনে আমার বাড়ি থেকেও মাছ ধরতে যেতে দিচ্ছে না। সম্প্রতি মুজাদখালী নদীতে রাজহাঁস, চিলেনহাঁস, পাতিহাঁস নামলে কুমির টেনে নিয়ে যায়।
ইউপি সদস্য বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, আমাদের এ অঞ্চলের মানুষ নদীর ঘাটে নামতে পারছেন না। কেউ কোন কাজ করতে পারছেন না। ৫ গ্রামে মানুষের মাঝে কুমির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বন বিভাগের লোক এসে কুিমর মারতে নিষেধ করেছেন। আহত নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, আমি নদীতে গোসল করতে যাই। নামার আগেই একটি বড় কুমির লেজ দিয়ে আঘাত করে।
কুমিরের বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম আবু নওশাদ বলেন, কুমির তো সীমানা চেনে না। খাদ্য ঘাটতি পড়লেই তারা উপরের নদ-নদীতে চলে আসে।