ডুমুরিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান রবি হত্যায় আ.লীগ নেতা তারা বিশ্বাস আটক

0

 

খুলনা ব্যুরো॥ খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবিকে হত্যা মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আজগর বিশ্বাস ওরফে তারা বিশ্বাসকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নগরীর রায়েরমহল এলাকায় তারা বিশ্বাসের অফিস থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় জেলা ডিবি পুলিশ।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকান্ত সাহার নেতৃত্বে জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের দুটি টিম তারা বিশ্বাসের অফিসে তল্লাশি চালায়। তবে ওসি সুকান্ত সাহা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
এরআগে রোববার রাতে নিহতের স্ত্রী শায়লা ইরিন ডুমুরিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শনিবার রাত ১০টার দিকে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলামকে গুটুদিয়ায় গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওইদিন সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভা শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোটরসাইকেলে খুলনা মহানগরীর বাসায় ফিরছিলেন চেয়ারম্যান রবি। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের গুটুদিয়া স্কুলের কাছে পৌঁছালে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে।
৪৫ বছরে ৭ ইউপি চেয়ারম্যানক খুন
ডুমুরিয়ায় গত ৪৫ বছরে সাত ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রবিউলের আগে সর্বশেষ ২০০১ সালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ডুমুরিয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান শেখ কবিরুল ইসলাম নিহত হন। এরপর কেটে গেছে ২৩ বছর। ২০০৪ সালে গুটুদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান খান আলমগীর হোসেন ভারতে বেড়াতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন।
পুলিশ, আওয়ামী লীগ নেতা ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে ডুমুরিয়ায় তৎকালীন খর্নিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শেখ মোকছেদ আলীকে প্রথম গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে সদর ইউপির শেখ কামাল উদ্দিন, ১৯৮৯ সালে সদর ইউপির শেখ আবদুল মজিদ, ১৯৯৯ সালে রুদাঘোরা ইউপির তোজাম সরদারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ২০০১ সালে নিহত কবিরুলের পিতা ছিলেন কামাল উদ্দিন। সর্বশেষ রবিউল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করল সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় উপজেলায় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক গোবিন্দ ঘোষ বলেন, এ ঘটনার পর উপজেলার সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে নতুন করে দুশ্চিন্তা ভর করছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, প্রশাসন ও জনগণ সচেতন থাকলে সন্ত্রাসীরা জনপ্রতিনিধিদের আর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
রবিউলকে হত্যার মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করেন ভূমিমন্ত্রী ও খুলনা-৫ আসনের (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, একসময় ডুমুরিয়া সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রশাসন ও নেতাদের জোর প্রচেষ্টায় তা বন্ধ হয়ে যায়। ২২-২৩ বছর পর আবার কোনো জনপ্রতিনিধিকে হত্যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে।