শিক্ষক শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের আন্দোলনে অচল যবিপ্রবি

0

যবিপ্রবি সংবাদদাতা॥ সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি, কোটা বাতিলের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনে কার্যত এক ধরনের অচল অবস্থা বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সোমবার শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা ছয় দিনের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যবিপ্রবিতে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এমনকি থিসিস, গবেষণাসহ ল্যাবের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকতে দেখা যায়। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতির ফলে সকল ধরনের অফিসের কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। শনিবার কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছেন যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও কর্মবিরতিতে যবিপ্রবির সকল অফিসের কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। তাদের এই আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশনসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্যে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। দাবি আদায় না হওয়ায় সর্বাত্মক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্লাস, পরীক্ষা বা দাপ্তরিক কার্যক্রম সবকিছুই অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ রয়েছে। সোমবার যবিপ্রবির স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় শিক্ষকরা অবস্থান করে তাদের দাবির পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন।
এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী গণআন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছেন যবিপ্রবির কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কোটা প্রথা সংস্কার করে দেশের মেধাবী সন্তানদের যোগ্য স্থানে বসতে দেওয়ার দাবি জানান। সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে যশোর শহরের পালবাড়ি থেকে মিছিল শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে যশোর প্রেসক্লাবের সম্মুখ সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় সার্কিট হাউসের সামনে ও মুজিব সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা-২০২৩ এর প্রজ্ঞাপন হতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার ও কর্মকর্তাদের ন্যে ইউজিসির সুপারিশকৃত অভিন্ন নীতিমালায় ১২ দফা সংযোজনের দাবিতে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশনের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল মধুসূদন দত্ত কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের নিচে যবিপ্রবির সকল কর্মকর্তা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করছেন।
পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির ডাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। দুপুর বারোটার দিকে প্রশাসনিক ভবনের নিচ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করে ও বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবনের নিচে সংক্ষিপ্ত অবস্থান ও আলোচনা শেষে কর্মসূচি সমাপ্তি করেন কর্মচারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন যবিপ্রবি কর্মচারী নেতৃবৃন্দ।