ঝিনাইদহে খরায় আউশ ও পাটক্ষেত ফেটে চৌচির

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় আউশের মাঠ ও পাটক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। কৃষকের কপালে তাই পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। বীজতলা দিতে না পেরে অনেক কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পুরো বৈশাখ- জ্যৈষ্ঠ মাস তীব্র গরম আর খরায় কেটেছে। আষাঢ়ের শুরতেও বৃষ্টির আভাস নেই । অথচ ঝিনাইদহের আশপাশে মাঝেমধ্যে বৃষ্টির দেখা মিলছে।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় চলতি আবাদ মৌসুমে ৪৪ হাজার পাঁচ শ হেক্টর জমিতে আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল। অনাবৃষ্টির কারণে ৬০% লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। অন্যদিকে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার আট শ হেক্টর জমিতে। আশানুরুপ বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর পাটের আবাদ কমেছে। জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম পাট চাষ হয়েছে। জেলার কৃষকরা সাড়ে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করতে পেরেছে।
সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে বীজতলা তৈরি করতে হয়েছে। এতে কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে ক্ষেতে পোকামাকড়ের উপদ্রুপ বৃদ্ধি পাবে। কৃষক বাবলুর রহমান জানান, আউশ আবাদে এখন সম্পূরক সেচ দিতে হচ্ছে, অথচ আগে সেচ লাগতো না। পাটের ক্ষেত্রেও তা হচ্ছে। হরিণাকু-ু উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, বৃষ্টির কারণে আউশ আবাদ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি পাট ক্ষেতেও এখন সেচ দিতে হচ্ছে। পুরো আষাঢ় জুড়ে যদি বৃষ্টি না হয় তবে পাট জাগ দেওয়াও সমস্যা হবে বলে তিনি মনে করেন।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ষষ্ঠী চন্দ্র রায় জানান, অনাবৃষ্টির কারণে আউশ ও পাট চাষিদের একটু ক্ষতি হচ্ছে। পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা এ কারণে আড়াই হাজার হেক্টর কমেছে। তবে আউশের টার্গেট পূরণ হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরও জানান, আষাঢ়েও যদি বৃষ্টি না হয় তবে কৃষকদের হেক্টর প্রতি খরচ বেড়ে যাবে। আমন আবাদ পুরো আষাঢ়ের বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, গঙ্গা-কপোতাক্ষ বা জিকের সেচ খালগুলোতে পানি দেওয়া শুরু হয়েছে। ফলে শৈলকুপা ও হরিণাকু-ুর কৃষকরা আউশ ও পাট ক্ষেতে পানি দিতে পারবেন।