শার্শায় মাদ্রাসাছাত্র তাজমিরের মৃত্যু হয়েছে নির্যাতনে দাবি পরিবারের

0

আজিজুল ইসলাম, বাগআঁচড়া (যশোর) ॥ যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা দারুচ্ছালাম মাদ্রাসার শিক্ষার্থী তাজমির মাহমুদ নয়ন (১২) দুর্ঘটনায় নয়, সহপাঠীদের নির্যাতনে মারা গেছে। এমনটি দাবি করেছেন তার পরিবার। তাজমিরের মা বলেছেন মৃত্যুর আগে তার ছেলে সব কথা বলে গেছে। নির্যাতনের একমাস পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তাজমির মাহমুদ নয়ন উপজেলার বেনাপোল বৃত্তিআঁচড়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে।
তাজমিরের স্বজনেরা জানান, গোগা দারুচ্ছালাম হাফিজিয়া মাদ্রাসার ধান সংগ্রহকালে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামে সহপাঠীদের সাথে তার গোলযোগ হয়। এতে তাজমিরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় তারা। এর জেরে গত ৮ মে রাতে আরিফুল, ইয়ানুর ও মহিম তাজমিরের ওপর নির্যাতন করে। রাতে ইয়ানুর তাজমিরের পা ধরে রাখে এবং মহিম তাজমিরের গলায় তার জড়িয়ে ফাঁস লাগায়। তাজমিরের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরুতে দেখে ঘাতকরা তাজমিরকে দোতালার ওপর থেকে নিচে ফেলে দেয়। প্রচার করতে থাকে তাজমির পাইপ বেয়ে তিন তলায় উঠতে গিয়ে নিচে পড়ে যায়। তাজমির ঘটনাটি তার শিক্ষকদের সাথে বলতে চাইলে তারা বলেন তুমি সুস্থ হলে সব শুনবো। একথা শিক্ষকরা আর শোনেননি।
পরের দিন তাজমিরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবশেষে ৩ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ ব্যাপারে ৪ জুন শার্শা থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ তার ছেলেকে নির্যাতনের পর মাদ্রাসায় থাকা তার বাক্স ভাঙচুর করা হয়। তাজমির মৃত্যুর আগে তার নির্যাতনের কথা পরিবারের কাছে জানিয়ে বিচার দাবি করেছে বলে জানান স্বজনেরা। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন নিহতের পরিবার। পিতা-মাতা ও স্বজনেরা প্রকৃত ঘটনা বের করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা পরিচলনা কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ বলেন, মাদ্রাসার দড়িতে গলায় ফাঁস লেগে সে আহত হয়েছে। তাজমির মৃত্যুর আগে তার শিক্ষকদের সাথে কিছু বলে যেতে চেয়েছিলো। কিন্তু তারা নানা অজুহাত দেখিয়ে তাজমিরের বিষয়ে কোনো খোঁজ খবর নেননি।
এ বিষয়ে শার্শা থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির বলেন এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হযেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় কেউ দোষী হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।