অভয়নগরে সরদার অলিয়ার ও বাঘারপাড়ায় বিপুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় দফার ভোট গ্রহণে যশোরের অভয়নগরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার অলিয়ার রহমান ও বাঘারপাড়ায় জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক বিপুল ফারাজী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগের দুই দফা নির্বাচনের মতো বুধবার নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। অন্য কোন রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ভোটার উপস্থিতিও ছিল আগের মতো।
স্টাফ রিপোর্টার, অভয়নগর (যশোর)জানান, অভয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরদার অলিয়ার রহমান চেয়ারম্যান ও সাফিয়া খানম মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আখতারুজ্জামান তারু বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান সরদার অলিয়ার রহমান ৫৪ হাজার ৭১ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের রাজঘাট-নওয়াপাড়া শিল্পাঞ্চল শাখা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিন অধিকারী ব্যাচা পেয়েছেন ৪৮ হাজার ২২১ ভোট।
অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি সাফিয়া খানম হাঁস প্রতীকে পেয়েছেন ৪২ হাজার ১৮১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ডা. মিনারা পারভিন ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৪১ হাজার ৩১৭ ও কলস প্রতীক নিয়ে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লায়লা খাতুন পেয়েছেন ১৭,৬৮৫ ভোট।
বাঘারপাড়া (যশোর) সংবাদদাতা জানান, বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বিপুল ফারাজী। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৫২ হাজার ১শ ৯৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য রনজিৎ রায়ের বড় ছেলে রাজীব কুমার রায় ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২০ হাজার ৮শ ১৪ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এনায়েত হোসেন লিটন। তিনি মাইক প্রতীকে ৩৪ হাজার ৮শ ৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএম শাহজালাল বই প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ৮শ ৬২ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দিলারা জামান প্রজাপতি প্রতীকে ২৬ হাজার ৩শ ৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শামছুন্নাহার লিমা পেয়েছেন ২২ হাজার ৮শ ১১ ভোট। এছাড়া চেয়ারম্যান পদে দোয়ত কলম প্রতীকের আব্দুর রউফ মোল্যা ১৫ হাজার ৬শ ১৬, হেলিকপ্টার প্রতীকের মাসুম রেজা ১হাজার ৪শ ৮৪, কাপ পিরিচের সেলিম রেজা বাদশা ৭শ ৭০ এবং আনারসের হাসান আলী পেয়েছেন ৫শ৭০ ভোট। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় হয়েছেন উড়োজাহাজ প্রতীকের তাওহিদুর রহমান। তিন ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ১শ ৪৫, টিউবওয়েল প্রতীকের আসাদুজ্জামান ৯ হাজার ৮শ ১৭, টিয়াপাখি প্রতীকের জয়নাল আবেদিন ৯হাজার ২শ ২, চশমা প্রতীকের নাজমুল হুসাইন ৯হাজার ১শ ৯৯ এবং তারা প্রতীকের গোলাম সরোয়ার পেয়েছেন ৩হাজার ৯শ ৭৫ ভোট। মহিরা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় হয়েছেন কলস প্রতীকের রেক্সনা খাতুন। তার প্রাপ্ত ভোট ২১ হাজার ৯ ভোট এবং পদ্ম ফুলের বিথীকা বিশ্বাস পেয়েছেন ২০ হাজার ১শ ৫৩ ভোট।
এ দুটি উপজেলায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হয়। তবে এই সিস্টেমে খুব কম ভোটারই ভোট প্রয়োগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অনেকের আঙুলের ছাপ মেলাতে দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা চালাতে হয়েছে।
বুধবার অভয়নগর ও বাঘারপাড়া উপজেলার ভোটকেন্দ্রগুলোতে প্রথম দুই ঘন্টায় ভোটার উপস্থিতি খুবই কম দেখা গেছে। অভয়নগরের নওয়াপাড়া শংকরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. উবায়দুজ্জামান জানান, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩২২৮ জন। সকাল ১০টা পর্যন্ত অর্থাৎ প্রথম দুই ঘন্টায় এ কেন্দ্রে ২৯০ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এসময় ওই কেন্দ্রে কয়েকজন ভোটার অভিযোগ করেন ইভিএমের কারণে তাদের ভোট দিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। শফিয়ার রহমান নামে একজন ভোটার বলেন, সকালে প্রথমে তিনি ওই কেন্দ্রে পরপর তিনবার আঙুলের ছাপ দেওয়ার পরও তার আঙলের ছাপ না মেলায় ভোট দিতে পারেননি। একই অবস্থা ছিলো বাঘারপাড়া উপজেলাতেও। বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী আব্দুর রউফ জানান, তিনি সকাল থেকে অনেকগুলো কেন্দ্র ঘুরে দেখেছেন। প্রত্যেক কেন্দ্রেই কেউ না কেউ ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। ইভিএমের কারণে ভোটগ্রহণে ধীরগতি হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।