চৌগাছায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মবিরতিতে ভোগান্তি রোগীদের

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছা হাসপাতালে ডাক্তার-নার্স লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করেছেন। মঙ্গলবার সকালে চৌগাছা-যশোর সড়ক সংলগ্ন হাসপাতালের সামনে এই মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার পৌরসভার বিশ্বাসপাড়ার এখতিয়ারের তিন বছরের শিশুকন্যা ইসরাত জাহানের নাকের ভেতর কুলের বিচি ঢুকে যায়। পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে এ দিন রাতে চিকিৎসার জন্যে শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে স্বেচ্ছাসেবী এক কর্মচারী নাক থেকে কুলের বিচি বের করার চেষ্টা করেন। একপর্যায় নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করে। রক্তক্ষরণকে কেন্দ্র করে জরুরি বিভাগে উপস্থিত উপস্বাস্থ্য সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুন্নাহার ও জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডা. সোহাগ হোসেনের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। তখন শিশুটির পিতা তাদের ওপর চড়াও হওয়ার পাশাপাশি দু’চিকিৎসককে ধাক্কা দিয়ে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় ফাহিম নামের এক কর্মচারী প্রতিবাদ করলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়।
এ ঘটনায় ডা. সোহাগ হোসেন এখতিয়ারের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে বিশ্বাসপাড়া থেকে থানা পুলিশ এখতিয়ারকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জরুরি চিকিৎসাসেবা ছাড়া হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কর্মবিরতির ফলে বেশকিছু রোগী ভোগান্তির শিকার হন বলে আগত রোগীরা জানান।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকী, ডা. সুরাইয়া ইয়াসমিন, ডা. ইয়াসির আরাফাত, ডা. আকিব হাসান, ডা. সোহাগ, ডা. লুৎফুন নেছা লতা, ডা. সঞ্চিতাসহ কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীবৃন্দ।
বেলা ১১ টার দিকে মানববন্ধনের বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে হাজির হন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস। এ সময় তিনি সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করলে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকী জানান, হামলার ঘটনাটি সত্যি দুঃখজনক। বিষয়টি হাসপাতালের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করা হয়েছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই আমরা হামলাকারীকে আটক করতে পারতাম। তারপরও শিশুটির চিকিৎসা ও মানবিকতার কারণে সোমবার রাতে আটক করা হয়নি। মঙ্গলবার মামলা হবার পর এখতিয়ারকে গ্রেফতার পূর্বক আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।