নরেন্দ্রপুরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আটক ২

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের পল্লীতে এক গৃহবধূ (১৯)কে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের জিরাট গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন জিরাট গ্রামের আব্দুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে আল আমিন বিশ্বাস ওরফে আল আমিন হোসেন (২৩) ও নুর আলী গাজীর ছেলে শামীম গাজী (৩১)।
কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী জানান, শনিবার ভুক্তভোগী ওই নারী ৩ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরানের নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইনসপেক্টর মোহাম্মদ আব্দুল আলীম রাতে জিরাট গ্রামে অভিযান চালিয়ে আসামি শামীম ও আল আমিনকে আটক করেন। তবে অপর আসামি সোহেলকে আটক করা যায়নি।
পুলিশ জানায়, আটকদের রোববার আদালতে সোপর্দ করা হলে এর মধ্যে আল আমিন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদ তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর অভিযোগ, গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় রূপদিয়া বাজারে জিরাট গ্রামের বাবর আলীর ছেলে ফয়সালের বাড়ির সামনে পৌঁছালে সেখানে অভিযুক্ত শামীমের সাথে তার দেখা হয়। তখন ভুক্তভোগী গৃহবধূর পরিচয় জানার পর শামীম তাকে জানান যে, তিনি তার স্বামীর বন্ধু। এবং বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে তাকে নিয়ে রওনা হন। কিছুদূর যাওয়ার পর অভিযুক্ত আল আমিন এবং আরেক অভিযুক্ত জিরাট গ্রামের সোহেল গাজীর (৩৪) সাথে তাদের দেখা হয়। এ সময় অভিযুক্ত ৩ জন বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে নিয়ে রওনা হন। তারা বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে চাউলিয়া গ্রামের জনৈক ইকবাল সরদারের খাটরার মাঠের তেঁতুল বাগানে নিয়ে যান। সেখানে কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই অভিযুক্তরা তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এ সময় সোহেল গাজী তাকে ধর্ষণ করেন। পাহারায় ছিলেন অপর দুই অভিযুক্ত। এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী গৃহবধূকে জিরাট গ্রামের সেলিম রেজা বাবুলের ফাইন ব্রিকসের পশ্চিমে শ্রমিকদের একটি ঘরে নিয়ে যান। সেখানে অভিযুক্তদের মধ্যে আল আমিন তাকে ধর্ষণ করেন। পাহারায় ছিলেন অভিযুক্ত দুই সহোদর সোহেল ও শামীম। এর কিছুক্ষণ পর সোহেল ও শামীম বাড়িতে চলে যান। তারা চলে যাওয়ার পর অভিযুক্ত আল আমিন ভুক্তভোগী গৃহবধূকে রাত ২টা পর্যন্ত আরো দুই দফা ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ২টার দিকে অভিযুক্ত সোহেল ফের সেখানে ফিরে আসেন। এ সময় তারা বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে সেখান থেকে তাকে নিয়ে রওনা হন। কিন্তু তাকে বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে রাত আড়াইটার দিকে জিরাট গ্রামের তানজিলা খাতুন নামে এক নারীর পরিত্যক্ত রান্নাঘরে নিয়ে যান। সেখানে অভিযুক্ত সোহেল ফের তাকে ধর্ষণ করেন। এরই এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ অভিযুক্তদের হাত পা ধরে কান্নাকাটি করলে ৫ অক্টোবর ভোর ৬টার দিকে আল আমিন তাকে রূপদিয়া বাজারে নিয়ে যান। এরপর তাকে সেখানে রেখে পালিয়ে যান অভিযুক্ত আল আমিন। পরে বাড়ি ফিরে এসে স্বামীসহ স্বজনদের কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ।