চৌগাছায় ধানক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত

0

এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় আমনধান ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত দেখা দিয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। আবহওয়া অনুকূল ও সঠিক পরিচর্যায় আমন ধানের থোড় হওয়া শুরু করেছে। সবুজ ও সতেজ গাছের গলায় ধানের শীষ উঠেছে। আর কিছু দিনের মধ্যেই ধানের শীষ দেখা দেবে। কৃষক আমন ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন বুনছেন । এমন সময়ে আমন ধানক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণে কৃষকের সে স্বপ্ন ম্লান হতে চলেছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে উপজেলার আন্দারকোটা, আন্দুলিয়া, খড়িঞ্চা, মাধবপুর, সিংঝুলীসহ প্রায়সব এলাকার ঘুরে দেখা যায়, দিগন্তজোড়া মাঠে দোল খাচ্ছে আমন ধান। ধানক্ষেতে বাঁশের কঞ্চিতে টাঙানো হয়েছে পলিথিন। সামান্য বাতাস লাগলেই বেজে ওঠে এটি। ইঁদুরের আক্রমণ থেকে ক্ষেত রক্ষা করতে এমন পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন কৃষকেরা। তাই তো টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার কৃষকদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এটি।
আপন ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েই চলেছে। মাঠের পর মাঠ সবুজ ধানক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ চোখে পড়ে। মেঠো রাস্তার ডানে-বামে চোখে পড়েছে ধানক্ষেতগুলোতে ইঁদুর তাড়ানোর জন্যে অসংখ্য কঞ্চির মাথায় সাদা-কালো পলিথিন, কালো কাপড়সহ বিভিন্ন নিশানা ও কাকতাড়–য়া পুঁতে রাখা হয়েছে।

রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক জহির উদ্দীন বলেন, আমন মৌসুমে এমন ইঁদুরের উৎপাত দেখা দিয়েছে। এ মৌসুমে ধানক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েই চলেছে। ধানের কচি শিষ খাওয়া ইঁদুর গর্তে থাকেনা। এরা ডোবা লালার কচুড়িপানায়, জোপ-ঝাড়, জঙ্গলে ও গাছে বাস করে। রাতের বেলা বের হয়ে ধান কেটে সাবার করে দিনের বেলায় আবার বাসস্থান চলে যায়। দেখতে স্বাভাবিক ইঁদুরের চেয়ে অনেক বড়। খুব দ্রুত চলাফেরা করতে পারে। ইঁদুরের হাত থেকে রক্ষা পেতে কৃষক ঝান্ডা লাগিয়ে, কাকতাড়–য়া দিয়ে ইঁদুর তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। অনেক জায়গায় ফসল রক্ষায় কৃষক রাত জেগে ফাঁসি জাল ও হাতে তৈরি ফাঁদ পেতে দুএকটি ইঁদুর মারছেন। অনেকে টর্চলাইট জ্বালিয়ে রাতে ক্ষেত থেকে ইঁদুর তাড়াচ্ছেন।

উপজেলার সিংহঝুলী গ্রামের কৃষক আবু তৈয়ব বলেন, ইঁদুর ধান গাছের গোড়া কেটে দিয়েছে। ক্ষেতে অনেক বড় বড় গর্ত তৈরি করছে। দিনের বেলা মানুষের উপস্থিতির কারণে তারা কম আক্রমণ করে। তবে রাত হলে উপদ্রব বেড়ে যায়। তাই এই পলিথিনের ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো শব্দ পেলে ইঁদুর স্থান পরিবর্তন করে। রাতে পলিথিন বাতাসে নড়ে উঠে। আর এই বাজনায় ইঁদুর পালিয়ে যায়।

উপজেলার কৃষি অফিসের তথ্য কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ বছর উপজেলায় বিভিন্ন জাতের ধান আবাদ হয়েছে ১৮২৪০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু এবার আমন মৌসুমে ধানক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েই চলেছে। ধানের কচি শিষ খাওয়া ইঁদুর গর্তে থাকেনা। এরা ডোবা- লালার কচুড়িপানায়, জোপ-ঝাড়, জঙ্গলে ও গাছে বাস করে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হোসাইন বলেন, ধানক্ষেতে ইঁদুরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে কৃষকরা নিজে থেকেই কঞ্চিতে পলিথিন টাঙিয়ে দিয়েছেন। বাতাসে যখন পলিথিন শো শো শব্দ করে সেই শব্দে ইঁদুর পালিয়ে যায়।