মনিরামপুর ১১ সেবাকর্মী নিয়োগ সংবাদ প্রকাশের পর ফেসবুকে বিরূপ স্ট্যাটাস স্বাস্থ্য কর্মকর্তার

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, মনিরামপুর(যশোর)॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জন সেবাকর্মী নিয়োগে অর্ধকোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যের সংবাদ দৈনিক লোকসমাজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদে বাস্তব চিত্র তুলে ধরায় ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পক্ষান্তরে নিয়োগদাতা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোন মন্তব্য করা না হলেও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.তন্ময় বিশ্বাস। তিনি নিজেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের ‘হলুদ সাংবাদিক’ আখ্যা দিয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট মিথ্যা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ফলে সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১১ জন সেবাকর্মী নিয়োগের জন্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর মধ্যে ওয়ার্ডবয় তিনজন, ল্যাব এটেনডেন্ট একজন, ওটি বয় একজন, ইমারজেন্সি এটেনডেন্ট একজন, আয়া একজন, বাবুর্চি একজন, স্টেচার বেয়ারার একজন, নিরাপত্ত প্রহরী একজন ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী একজন। এ সেবাকর্মী নিয়োগের কাজটি পান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স অর্থ প্রাইভেট লিমিটেড। ১১ পদের বিপরীতে এলাকার শতাধিক প্রার্থী আবেদন করেন।
জানা যায়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক কাজল বিশ্বাস, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তন্ময় বিশ্বাস এবং পৌরশহরের মেসার্স ফিফো ডিজিটালের পরিচালক অসিত মল্লিক ঘনিষ্ট বন্ধু। অভিযোগ রয়েছে, এ তিন বন্ধুর সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয় নিয়োগ সিন্ডিকেট। ফলে এলাকার প্রার্থীদের চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই থেকে তিনলাখ করে অগ্রিম বাবদ নেয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ঘুষদাতাদের মধ্যে ১১ জনকে চাকরি দেয়া হয়। অন্যদিকে চাকরি বঞ্চিতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। বাকিদের টাকা ফেরত দেয়া নিয়ে তারা নয়ছয় করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তন্ময় বিশ্বাস তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছিলেন নিয়োগে তার কোন হাত নেই। যা কিছু হয়েছে তা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান করেছেন। তার এই বক্তব্য গতকাল প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা। অপরদিকে অসিত মল্লিক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কাজল বিশ্বাসের বক্তব্য অনুরুপভাবে প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। অথচ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.তন্ময় বিশ্বাস। তিনি সংশ্লিষ্ট সব সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিক আখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সাংবাদিকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করায় নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এরা হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিকাইল হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শহিদুল ইসলাম মিলন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাজী হাশেম আলী, সন্দীপ ঘোষ, থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন খান, পৌর বিএনপির সভাপতি খায়রুল ইসলাম,সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাই প্রমুখ।