কলারোয়ায় কোচিং বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন অসাধু শিক্ষকরা

0

কে. এম. আনিছুর রহমান,কলারোয়া(সাতক্ষীরা) ॥ কলারোয়ায় কোচিং বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা। যে যার মতো বাড়িতে চেয়ার-টেবিল পেতে খুলে বসেছেন কোচিং সেন্টার।
স্থানীয় একাধিক তথ্য সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা ক্লাসমুখি না হয়ে কোচিংমুখি হচ্ছে বেশি। কলারোয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়া রীতিতে পরিণত হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাইভেট কোচিং বন্ধ নীতিমালা আইন ২০১২ সালে পাশ হয়। স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা তা উপেক্ষা করে কোচিংকে বাণিজ্য হিসেবে নিচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখানোর চেষ্টা না করে কোচিং করার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ করে তুলছে এ সব অসাধু শিক্ষক।
অভিভাবক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমার মেয়ে দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ায় তাকে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, রসায়ন, পদার্থ, জীব বিজ্ঞানসহ মোট ৫ জন শিক্ষকের কাছে পড়াতে হয়। স্বল্প আয় করে মাসে কোচিং বাবদ ৫ হাজার টাকা, আরও অন্যান্য খরচ করে লেখাপড়া শেখানো আমাদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। এই অবৈধ প্রতিযোগিতা থেকে আমরা বের হতে না পারলে মানসম্মত শিক্ষা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে তিনি মনে করেন। এভাবে চলতে থাকলে গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঝরে যেতে পারে। এমন সুযোগে কোচিং বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষকরা চাকরির ফাঁক ফোঁকরে মাসে ১২ দিন শিক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থী প্রতি ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কলারোয়া পৌর সদরের মনিরুজ্জামান বলেন, তুলমীডাঙ্গা ২নং ওয়ার্ডে আবাসিক এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দেবাশীষ নামে এক ব্যক্তি প্রাইভেট পড়ান। তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন না। তাই সকাল ৬ টা থেকে ব্যাচ শুরু করেন আর শেষ করেন সন্ধ্যা ৭টায়। তার ধারণা ওই ব্যক্তি বিভিন্ন শ্রেণিতে পড়া কমপক্ষে ৩০০ ছেলে মেয়ে পড়ান।
কলারোয়া পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামান বিপ্লব বলেন, কোচিং সেন্টারগুলোর জন্য আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীরাও ঠিকমতো আসতে চায় না। এই অবৈধ কোচিং সেন্টারগুলো আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি করছে। কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ হলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসমুখি হবে।
উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন- অর- রশিদ বলেন, কোচিং প্রাইভেট ও মাধ্যমিকের জন্য নোট-গাইড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমরা প্রতিটি মাসিক সম্বন্বয় মিটিংয়ে শিক্ষকদের কোচিংয়ের ব্যাপারে সতর্ক করে থাকি। সরাসরি আমাদের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ না থাকায় তাদের আমরা শাস্তির আওতায় আনতে পারি না। এ কারণে আমরা মাঝে মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সহযোগিতার অনুরোধ করে থাকি।