পদ্মাসেতু চালুর পরে মোংলা বন্দরের ব্যস্ততা বেড়েছে

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ পদ্মাসেতু চালুর পরে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের ব্যস্ততা বেড়েছে কয়েকগুণ। ঢাকা থেকে সড়ক পথে চট্টগ্রাম বন্দরের থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব কম হওয়ায় পণ্য আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দরের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। ইতোমধ্যে প্রথমবারের মত গার্মেন্টস পণ্য রফতানি শুরু হয়েছে এই বন্দর থেকে। এক বছরে ৫টি জাহাজে করে বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে মোংলা বন্দর দিয়ে। পাশাপাশি কন্টেইনারবাহী জাহাজের আগমন বেড়েছে ১৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থ বছরে যেখানে কন্টেইনারবাহী জাজাজ এসেছিল ৪৫টি, এবার এসেছে ৫২টি।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ৬ হাজার ২৫৬ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী। তিনি বলেন, বর্তমানে বন্দর এলাকায় ১১টি এলপিজি কারখানা, ৫টি সিমেন্ট কারখানা ও বিভিন্ন ধরনের ১০টি শিল্প কারখানা রয়েছে। বন্দরের ২৫৮ একর জমিতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল বেপজা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পদ্মাসেতুর মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দরের ব্যস্ততা বেড়েছে কয়েকগুণ। বিদেশি জাহাজের আগমন-নির্গমন বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে, দুটি বিশ্ব ঐতিহ্যের জেলা বাগেরহাট আগে থেকেই পযটন শিল্পে সমৃদ্ধ। পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পরে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ ও সুন্দরবনে উল্লেখযোগ্য হারে দর্শনার্থী ও রাজস্ব আয় বেড়েছে সরকারের । সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, পর্যটন খাতকে আরও এগিয়ে নিতে বনের মধ্যে চারটি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র নির্মাণ চলছে। গত এক বছরে সুন্দরবনে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮ জন দেশি ও ১ হাজার ৬৭৫ বিদেশী দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। যার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে এক কোটি ৮৭ লাখ ৬৭ হাজারে টাকা। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। তিনি আরও বলেন, নতুন চারটি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র চালু হলে সরকারের রাজস্ব ও দর্শনার্থীর আগমন কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
বাগেরহাটে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ও প্রাচীন আমলের পুরাকৃতি দেখতে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের সমাগম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্নতত্ব বিভাগের কাস্টোডিয়ান মোহাম্মাদ যায়েদ।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর ষাটগম্বুজ দেখতে চার লাখ ৯৬ হাজার ৮জন দেশি ও ১ হাজার ৪৮২ জন বিদেশী দর্শনার্থী এসেছেন। যার মাধ্যমে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮৭ লাখ টাকা। গত বছর ২০২১-২২ অর্থ বছরে দেশি দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার এবং বিদেশী দর্শনার্থী ছিল ২৮৯ জন। এছাড়া পযটন খাতকে এগিয়ে নিতে নানা পরিকল্পনা চলছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, পদ্মাসেতু নির্মাণে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছে। এই অঞ্চলের মানুষের সব ক্ষেত্রেই অগ্রগতি হয়েছে। মোংলা বন্দরকেন্দ্রিক নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে।