ঈদ বাজারে ধর্মঘটে দর্জি শ্রমিকরা, শর্তভঙ্গের অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ মালিক পক্ষ

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটে নেমেছেন যশোর বড়বাজারের কাপুড়িয়াপট্টি এলাকার দর্জি শ্রমিকরা ।  শনিবার (২৫ মার্চ ) থেকে তারা কোনো কাজ করছেন না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদ উপলক্ষে পোশাক তৈরির জন্যে অর্ডার দিতে আসা মানুষরা। একদিকে তারা নতুন পোশাক বানাতে পারছেন না, আবার যারা আগেই পোশাক বানাতে দিয়েছেন তারাও সরবরাহ পাচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশের কাছে যশোর বড়বাজার পোশাক তৈরি ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
দর্জি শ্রমিকরা জানান, তারা কাজ করেন মালিকের দোকানে। কাজের বিনিময়ে মালিক তাদের মজুরি দিয়ে থাকেন। তারা মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু মালিকপক্ষ তা মানতে নারাজ। তাই দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। এ জন্যে যশোর বড়বাজারের আওতাভুক্ত ৬২ টি দোকানের ১৭০ জন দর্জি শনিবার থেকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ ) যশোর বড়বাজার এলাকার বিভিন্ন টেইলার্সের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ দর্জির দোকান খোলা থাকলেও কাজ হচ্ছে না। মালিকরা একাই বসে আছেন। মালিকদের মধ্যে যারা কাজ জানেন তারা কাজ করছেন। নতুন অর্ডার নিলেও কবে ডেলিভারি দেয়া হবে তাও বলা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে যশোর বড়বাজার পোশাক তৈরি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কোবাদ আলী বলেন, দর্জি শ্রমিকদের মজুরির বিষয়ে দুই বছরের একটি চুক্তি রয়েছে। ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তাদের মজুরি নির্ধারণ করে দুই বছরের একটি চুক্তি করা হয়। এখনও চুক্তির মেয়াদ শেষ না হলেও কতিপয় দর্জি শ্রমিক ঈদ সামনে রেখে পরিকল্পিতভাবে ধর্মঘট শুরু করেছে। তিনি বলেন, দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হলেও অনেক সাধারণ শ্রমিক এর সাথে নেই। দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহাদুর রহমান রিগান তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য করছেন।
মালিক সমিতির সভাপতি আকতারুজ্জামান বলেন, বড়বাজার দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহাদুর রহমান রিগানসহ অজ্ঞাত কিছু লোক যেসব শ্রমিক কাজ করতে ইচ্ছুক তাদেরকে প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে দোকান থেকে জোর করে বের করে দিয়েছেন। এসব কারণে পরিস্থিতি খুবই উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময়ে বাজারে এ নিয়ে রক্তক্ষয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা যশোর কোতয়ালি থানা পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে যশোর বড়বাজার দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহাদুর রহমান রিগান বলেন, মালিক পক্ষের সাথে আমাদের দুই বছরের চুক্তি রয়েছে সত্যি। তবে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারের কথা চিন্তা করে আমরা ঈদ উপলক্ষে আমাদের মজুরি বাড়ানোর কথা বলেছি। কিন্তু তারা কোনোভাবেই তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, যশোর কালেক্টরেট মার্কেটসহ অন্যান্য বাজারের মালিকরা দর্জি শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে দিলেও তারা আমাদের কোনো দাবি না মানার ব্যাপারে অনড় রয়েছেন। এ অবস্থায় আমাদের ধর্মঘটে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
এ বিষয়ে দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, মালিকপক্ষ আমাদের সাথে সমঝোতা না করে থানায় অভিযোগ করে বিষয়টি উস্কে দিচ্ছে। শ্রমিকদের জোর করে আন্দোলনে নামানো হচ্ছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মোটেও সত্যি নয়।