সুন্দরবনে বেপরোয়া হরিণ শিকার

0

শরণখোলা(বাগেরহাট) সংবাদদাতা॥ হরিণ শিকার বেড়ে গেছে পূর্ব সুন্দরবনে । বনের পাশের এলাকার শিকারীরা নিয়মিত হরিণ শিকার করে তার মাংস ও তার চামড়া বিক্রি করছে। কাঁকড়া শিকারের টোপ বানাতেও এক শ্রেণির জেলে ব্যাবহার করছে হরিণের  মাংস। গত ১৫ দিনে এ চক্রের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪৬ কেজি হরিণের মাংস, চারটি চামড়া,হরিণ ধরা ফাঁদ,২০ রাউন্ড গুলি ও একটি ট্রলার। এ ঘটনায় ১০ শিকারীকে আটক করেছে বনরক্ষিরা ।
শরণখোলার সোনাতলা,পানিরঘাট,রাজাপুর,রসুলপুর, মোড়েলগঞ্জের জিউধরা,পাথরঘাটর চরদুয়ানী,জ্ঞানপাড়া এলাকার শিকারীরা ব্যাবসায়ীক উদ্দেশ্যে জেলে বেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে নিয়ে আসেন । অনেক চোরাশিকারী আবার গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে হরিণ মেরে থাকে। রামপাল ও সাতক্ষীরা এলাকার জেলেরা কাঁকড়ার টোপ বানাতে নিয়মিত হরিণ শিকার করছেন বলে জানা গেছে। সুন্দরবনের সুপতি,দুবলা,কটকা,কচিখালী,বাদামতলা, চান্দেশ্বর, টিয়ারচর, কোকিলমুনি,আন্ধারমানিকসহ গভীর বনের সুবিধাজনক স্থানে লাইলনের ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করা হয়ে থাকে । তারা মছের পেটিতে মাংস রেখে বরফ দিয়ে সুবিধাজনক সময় লোকালয়ে তা পাচার করে থাকে। প্রতি কেজি হরিনের মাংস ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় শিকারীর নিয়মিত হরিণ শিকার করে আসছে। বনরক্ষিদের হাতে দু-চারটি হরিণ পাচারের ঘটনা ধরা পরলেও শিকারীরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে খুব সহজেই বেড়িয়ে আসছে।
বনবিভাগ সূত্র জানান,গত ২৭ জানুয়ারি দুবলার জামতলা ও আলোরকোল থেকে হরিণের মাংস ও ফাঁদসহ ৫ হরিণ শিকারীকে আটক করেছে বনরক্ষিরা। আটক রাজিব,ইউনুস,প্রদীপ, নওশের ও ইদ্রিস রামপালের শ্রীফলতলা গ্রামের বাসিন্দা। গত ২৫ জানুয়ারি সুন্দরবনের নীলকমল এলাকা থেকে ২০ কেজি হরিনের মাংস ও ২০ রাউন্ড গুলিসহ পাথরঘাটার হিরো আকন নামের এক শিকারীকে আটক করে বনরক্ষিরা। ২৩ জানুয়ারি শরণখোলার খুড়িয়াখালী গ্রামের তানজের আলীর বাড়ি থেকে দুটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করে শরণখোলা স্টেশনের বনরক্ষিরা। ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সুন্দরবনের কচিখালীর ডিমের চর থেকে ১৫ কেজি হরিণের মাংস ও একটি ট্রলারসহ দুই শিকারীকে আটক করে কচিখালীর বনরক্ষিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা জানান, হরিণ শিকার আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। গভীর বনে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করা হচ্ছে।
সুন্দরবন সহ-ব্যাবস্থাপনা কমিটি সিএমসির সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান মিলন জানান, বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সুন্দরবননের হরিণ শিকারী চক্র । বনসংলগ্ন এলাকার লোকজনই হরিণ শিকারের সাথে বেশি জড়িত ।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, হরিণ শিকারীদের ধরতে বন বিভাগের টহল অব্যাহত আছে। নিয়মিত টহলে কারণে শিকারীরা আটক হচ্ছে।